

প্রথমবারের মতো আইসিসির কোন টুর্নামেন্টে সেমিফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ। খুব সহজে অর্জিত হয়নি এই সফলতা। হেরে যাওয়া, তারপর ভাগ্যের সহায়তা এবং শেষে ঘুরে দাঁড়িয়ে প্রতিপক্ষকে চমকে দিয়ে জেতা। তবুও নিশ্চিত ছিলোনা সেমিফাইনাল খেলা। তাকিয়ে থাকতে হয়েছিলো দুইটি ভিন্ন দলের মুখোমুখি লড়াইয়ের দিকে। তো সেমিফাইনালে যাবার পথটা কেমন ছিলো দেখে নেওয়া যাক।
জো রুটে ম্লান তামিক ইকবাল
এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির যাত্রাটা শুরুই হয়েছিলো বাংলাদেশের ম্যাচ দিয়ে। স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওভালে লড়েছিলো বাংলাদেশ। তামিম ইকবালের অসাধারণ শতক(১২৮), মুশফিকুর রহিমের অনবদ্য অর্ধশতকের পরেও শেষদিকে ব্যাটসম্যানরা দ্রুত রান তুলতে ব্যর্থ হলে বাংলাদেশ থামে ৩০৫ রানে। দিনশেষে যা যথেষ্ঠ হয়নি রুট, হেলস, মরগ্যানদের অসাধারণ ব্যাটিংয়ে। তামিমের ১২৮ রান ম্লান হয়ে যায় রুটের অপরাজিত ১৩৩ রানে। বাংলাদেশ ম্যাচটি হারে ৮ উইকেটের ব্যবধানে।
তামিমের শতক না হবার বেদনা কমলো বৃষ্টিতে
দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া। হারলেই টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিতে হবে এমন সমীকরণ নিয়ে খেলতে নেমে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা খেই হারিয়ে ফেলে অজি বোলারদের সামনে। শুধু ব্যতিক্রম ছিলেন তামিম ইকবাল। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে টানা দুই শতক পাওয়া থেকে ৫ রান দূরে থাকতে আউট হন তিনি। বাংলাদেশ অলআউট হয় মাত্র ১৮২ রানে। অস্ট্রেলিয়া ১৮৩ রানের লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছিলো দারুণভাবেই। ১৬ ওভার শেষে অজিদের রান যখন ১ উইকেট হারিয়ে ৮৩ তখন বৃষ্টির কবলে পড়ে ম্যাচটি পন্ড হয়ে যায়। কোন পয়েন্ট না পাবার শঙ্কা দূর হয় বাংলাদেশের। আশীর্বাদ হয়ে আসা বৃষ্টিতে বাংলাদেশ পায় টুর্নামেন্টে টিকে থাকার নিশ্চয়তা।
সাকিব-মাহমুদউল্লাহ’র ব্যাটে এলো স্বস্তির জয়
বাংলাদেশের জয় পেতে অপেক্ষা করতে হয় ৩য় ও গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচ পর্যন্ত। যদিও জয়টা অত সহজে ধরা দেয়নি মাশরাফিদের কাছে। নিউজিল্যান্ডের ছুঁড়ে দেওয়া ২৬৬ রানের লক্ষ্য ছুঁতে গিয়ে ধুঁকতে থাকে বাংলাদেশের টপঅর্ডার। মুশফিকুর রহিম যখন চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন দলের রান তখন মাত্র ৩৩! ২৬৬ তখন মনে হচ্ছিলো অনেক দূরের পথ। সেই কঠিন পথ বাংলাদেশ অনায়াসে পাড়ি দিতে পেরেছে সাকিব-মাহমুদউল্লাহ’র রেকর্ড জুটিতে। দুইজনের ২২৪ রানের জুটিতে বাংলাদেশ জয় পায় ১৬ বল হাতে রেখেই। সাকিব ১১৪ রান করে আউট হলেও মাহমুদউল্লাহ অপরাজিত থাকেন ১০২ রান করে।
অস্ট্রেলিয়ার পরাজয়ে নিশ্চিত হলো সেমি
বাংলাদেশ নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে দেবার সাথে সাথে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়ে ব্ল্যাকক্যাপসরা। অন্যদিকে সেমিফাইনাল আগেই নিশ্চিত করে ফেলেছিলো ইংল্যান্ড। তাই ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ অস্ট্রেলিয়ার পাশাপাশি সমান গুরুত্বপূর্ণ ছিলো বাংলাদেশের জন্যেও। যেখানে অস্ট্রেলিয়ার পরাজয় বা বৃষ্টিই নিশ্চিত করতে পারতো বাংলাদেশের সেমিফাইনালে খেলা। অস্ট্রেলিয়া সেখানে পেরে ওঠেনি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। আর তাতেই বাংলাদেশ পেয়ে গেছে ১ম বারের মতো আইসিসির কোন টুর্নামেন্টে সেমিফাইনাল খেলার টিকিট।