

ক্যারিয়ারের পড়ন্ত বেলা কাটাচ্ছেন, কিন্তু বল হাতে আগুন ঝরাচ্ছেন সেই পুরোনো তেজেই। এ যেন শুরুর মালিঙ্গা, দুর্দান্ত ইয়র্কারে কিউই ব্যাটসম্যানদের নাভিশ্বাস তুলে গতকাল (৬ সেপ্টেম্বর) পাল্লেকেলেতে গড়েছেন রেকর্ডের পর রেকর্ড। মালিঙ্গা বলছেন নিজের সেরা অস্ত্র কাজে লাগাবেন ভেবে রেখেছেন আগেই, তরুণদের নিতে বলেছেন অনুপ্রেরণা।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে চারটি হ্যাটট্রিক নিয়ে এতদিন যৌথভাবে শীর্ষে ছিলেন মালিঙ্গা-ওয়াসিম। কিন্তু গতকাল পাল্লেকেলে যে দুহাত ভরে দিয়েছে লঙ্কান কাপ্তানকে, এমন দিনে ছাড়িয়ে গেলেন পাকিস্তানের কিং অফ সুইংখ্যাত ওয়াসিমকে। টানা চার বলে চার উইকেট নিয়ে পাঁচটি হ্যাটট্ট্রিক নিয়ে সবার উপরে এখন লাসিথ মালিঙ্গা।
আগের দুই ম্যাচ হেরে সিরিজ হাতছাড়া হয়েছে আগেই, ধবলধোলাই এড়াতে জয় ছিল আবশ্যকীয়, কিন্তু আগে ব্যাট করা লঙ্কান ব্যাটসম্যানরা হলেন ব্যর্থ, পুঁজি মাত্র ১২৫। নিজের দ্বিতীয় ওভারেই টানা চার বলে কলিন মুনরো, রাদারফোর্ড, টেলর ও গ্র্যান্ডহামকে ফিরিয়ে মালিঙ্গা ম্যাচ নিয়ে আসেন হাতের মুঠোয়। কি ছিল আসলে তার পরিকল্পনা বলতে গিয়ে জানান, ‘প্রথম উইকেট নেওয়ার পর নতুন অনভিজ্ঞ ব্যাটিসম্যানকে (রাদারফোর্ড) ফেরাতেই হবে। আমার সেরা অস্ত্র ইনসুইং ইয়র্কার দিলাম, আউটই হল।’
ইয়র্কারে প্রথম দুই উইকেট নেওয়ার পর ক্রিজে আসেন সিরিজে কিউইদের সেরা দুই ব্যাটসম্যান, তাদের নিয়েই কি ভাবনা ছিল মালিঙ্গার? বলতে গিয়ে জানান, ‘এরপর গ্র্যান্ডহোম ও টেইলর আসে। পুরো সিরিজেই দুজন বেশ ভুগিয়েছে আমাদের। অন্য কেউও তাকে আটকাতে পারছিলনা। এদের ফেরাতে পারলেই আমরা ম্যাচে থাকবো মাথায় ঘুরছিল। তখনই ভাবলাম আগের দুটো ইয়র্কার দিতে পারলে আরেকটি কেন নয়? রান আপে এসেছি ইয়র্কার দিবো ভেবেই, দিয়েছিও আর ফলতো দেখাই। টাইমিংটা যথার্থ ভালো হওয়ায় আউটও করি। তখনই আবার ভাবি চতুর্থবারেও একই জিনিস চেষ্টা করবো, প্রস্তুতি মোতাবেক সেটাই করেছি।’
একমাত্র বোলার হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দুবার টানা চার উইকেট। কালকের আগে ২০০৭ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে নিয়েছেন প্রথমবারের মত টানা চার উইকেট। চলতি বছরের শুরুতে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে টানা চার বলে উইকেট নিয়ে দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে টানা চার উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েন রাশিদ খান। গতকাল (৬ সেপ্টেম্বর) নিজে দ্বিতীয়বার এমন কীর্তি গড়ে এককভাবে থাকলেন শীর্ষে। তবে বাজে সময়ে সবাই এসব ভুলে যায় বলেও আক্ষেপ মালিঙ্গার, ‘এটি আমার জন্য বড় অর্জন। আর এটি এখন ইতিহাস। তবে কাল (ভবিষ্যতে) যখন আমি খারাপ করবো সবাই এসব ভুলে যাবে। কিন্তু ক্যারিয়ারের শেষ বেলায় এসে টি-টোয়েন্টিতে টানা চার উইকেট নিতে পেরে আনন্দিত।”
এদিকে যাদের সাথে শুরু করেছেন তাদের কেউই নেই সতীর্থ হিসেবে। একদম তরুণ ক্রিকেটারদের সামনে এমন পারফরম্যান্স উদ্ভুদ্ধ করবে তাদের এমনটাই প্রত্যাশা গতকালই প্রথম বোলার হিসেবে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ১০০ উইকেটের মাইলফলক ছোঁয়া মালিঙ্গার। তিনি বলেন,’ আমার সাথে যেসব তরুণ ক্রিকেটার খেলছে তারা খুব কাছ থেকে দেখলো এমন কীর্তি। আমি মনে করি এটি তাদের জন্য অনুপ্রেরণা হতে পারে, তারা ভাববে তারাও চাইলে এমন কিছু করতে পারে। ‘