

বাংলাদেশের ক্রিকেটাঙ্গন গত বেশ কিছুদিন ধরেই তোলপাড় বিপিএল ইস্যুতে। বিপিএলের সপ্তম আসর ঘিরে সব পরিকল্পনা সাজিয়েও রেখেছিল বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল। কিন্তু হঠাৎ করে ঢাকা ডায়নামাইটসের আইকন খেলোয়াড় সাকিবের রংপুর রাইডার্সে যোগ দেওয়াতেই শুরু হয় নানা বিব্রতকর পরিস্থিতির। নতুন খবর আসন্ন আসরের বিপিএল আয়োজনই যেতে পারে আটকে।
মূলত সাকিবের দলবদলের পর তার আগের ফ্র্যাঞ্চাইজি ঢাকা ডায়নামাইটস তার দল বদলের প্রক্রিয়া নিয়ে তোলে প্রশ্ন আর সেখান থেকেই বিতর্কের সুত্রপাত। ঢাকার দাবি তাদের সাথে চুক্তি বাতিল না করেই রংপুর রাইডার্সের সাথে যুক্ত হয়েছে সাকিব। তাদের এ নিয়ে রেশারেশির এক পর্যায়ে বিপিএল গভর্নিং কমিটি দিয়ে বসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
সংবাদ সম্মেলন ডেকে জানায় বিসিবির সাথে বিপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজিদের চার বছরের চুক্তি শেষ এ বছরেই। অথচ সাকিব ইস্যু খবরের শিরোনাম হওয়ার আগে এ নিয়ে কোন কথাই বলেনি বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল। বরং চিঠি দিয়ে দল গুছাতেও উৎসাহীও করে দলগুলোকে। বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সংকেত পেয়ে দলগুলোও প্রস্তুতি নিতে শুরু করে।
কুমিল্লার তামিম নাম লেখান খুলনায়, চট্টগ্রামের মুশফিক ঠিকানা বদলে হয়ে যান কুমিল্লার। তখনও নীরব ভুমিকাই পালন করেন বিপিল গভর্নিং কাউন্সিল। কিন্তু সাকিবের দলবদলের পরই সব এলমেলো হয়ে যায়, শুরু হয় নতুন নাটক। বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল ঘোষণাই করে এর আগে খেলয়াড়দের সাথে হওয়া চুক্তি অবৈধ।
ফলে বেশ বিপাকে পরে দলগুলো, দফায় দফায় হয় বৈঠক। নতুন নিয়মের অধীনেই বিপিএল হবে ঘোষণা বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের, এদিকে দলগুলো তুলে ধরেছে নিজেদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট দাবিদাওয়া। ফলে এখনো পর্যন্ত ডিসেম্বরে বিপিএল আয়োজনের সব কাজই হয়ে গেছে ধীর। কাজের গতি দেখে বলার উপায় নেই ঠিক সময় আর সঠিক পরিকল্পনা মোতাবেকই অনুষ্ঠিত হবে বিপিএল।
জাতীয় নির্বাচনের জন্য ২০১৮ সালের বিপিএল আয়োজন হয় চলতি বছরের জানুয়ারিতে। এদিকে এবারের আসর নিয়েও চলছে গড়িমসি। বিশ্বস্ত সূত্র বলছে আসন্ন বিপিএল মাঠে না না গড়ানোর জন্য ইতোমধ্যে প্রভাবশালী একটি দল শক্ত অবস্থানও নিয়ে নিয়েছে। এদিকে যথাসময়ে বিপিএল আয়োজনের জন্য যেসব কাজ এরই মধ্যে সেরে ফেলার কথা বিসিবির সেসবের কিছুই এগচ্ছেনা দ্রুত গতিতে।
চট্টগ্রামের ফ্র্যাঞ্চাইজির জন্য মালিক খুঁজে পাওয়া যায়নি এখনো, আইকন খেলয়াড় ইস্যুতে ছাড় দিতে রাজি নয় দলগুলোও । ফলে জগা খিচুড়ি অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে, যা দেশের ক্রিকেট ও বিশেষ করে বিপিএলের ভবিষ্যতেকেই ফেলে দিচ্ছে হুমকিতে। এর আগেও ফিক্সিং কেলেঙ্কারিতে বিশ্বদরবারে ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে বিসিবির। বিপিএল বন্ধ ছিল ২০১৩-১৪ মৌসুম।
খেলোয়ারদের বকেয়া পরিশোধ নিয়ে বিতর্কতো ছিল নিয়মিত ঘটনা। বিসিবির শক্ত অবস্থানের কারণে এই ইস্যুতে এসেছে বেশ ইতিবাচক পরিবর্তন। কিন্তু সব ছাপিয়ে নতুন করে শুরুর আভাস দেওয়া বিসিবি এবার যদি আবারও বন্ধ করে বিপিএল আয়োজন তবে পড়তে হবে আরও বড় লজ্জা ও ক্ষতির সম্মুখে। বিদেশি ক্রিকেটারদের সাথে হওয়া ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর চুক্তিরইবা কি হবে? ভবিষ্যতে বিপিএল খেলতে নিশ্চিতভাবেই অনুৎসাহী করবে তাদের। এদিকে অনেক বড় আয় থেকেও বঞ্চিত হবে বিসিবি। সবচেয়ে বড় ব্যাপার আন্তর্জাতিক আঙ্গিনায় বিপিএলের গ্রহনযোগ্যতা নিয়ে উঠবে প্রশ্ন!