

এবারের ডিপিএলে(ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ) চ্যাম্পিয়ন হয়েছে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স। গাজীর এই শিরোপা জয়ে বল হাতে অসাধারণ অবদান রেখেছেন আবু হায়দার রনি। সবাইকে পেছনে ফেলে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহক রনিই। নিজের ক্রিকেট ক্যারিয়ার ও পছন্দ নিয়ে ক্রিকেট৯৭ এর সাথে কথা বলেছেন তরুণ এই পেসার।
-ভাল আছেন?
রনি: জ্বি, আলহামদুলিল্লাহ্, আপনাদের দু’আয় ভাল আছি।
-দু’হাতের তালু যা নিয়ে খুব ব্যস্ততায় কাটে, সেই ক্রিকেট বল প্রথম কবে হাতে নিয়েছিলেন?
রনি: ক্রিকেট বল প্রথম ধরেছি হল ২০০৭ সালে। অভিজ্ঞতাটি স্কুল ক্রিকেটে হয়েছিল। এমনিতে টেপ-টেনিস দিয়ে খেলেছি অনেক ছোট থেকে।
-কোন স্কুলে ছিলেন?
রনিঃ আঞ্জুমান আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়।
-আজকের রনি ক্রিকেটার হবার পিছে কার হাত ধরে হাঁটা?
রনি: সজল তালুকদার। আমার দাদা। উনি এখন নেই আমাদের মাঝে।
-দুঃখিত।
রনি: না, ঠিক আছে।
-যদি ক্যারিয়ারের একটি উইকেটকে সবচেয়ে তৃপ্তিকর ধরতে বলা হয়, কোনটিকে বেছে নিবেন?
রনি: অবশ্যই ২০১৫তে বিপিএলে সিমন্সকে যেই আউট করেছিলাম। এখন পর্যন্ত ক্যারিয়ারে এটাই সেরা উইকেট মনে করি।
-সুইং-এর ক্ষেত্রে কাকে নিজের অনুপ্রেরণা হিসেবে বেছে নিয়েছেন?
রনি: মেইনলি সুইং এর ক্ষেত্রে আমি ওয়াসিম আকরামকে ফলো করি আর ওভারঅল বোলিং-এর ক্ষেত্রে আমিরকে ফলো করি।
-কোচ হিসেবে জীবনে কাকে পেতে চাইবেন?
রনি: মুহাম্মাদ সালাহউদ্দিন।
-কোনো ড্রিম উইকেট আছে কি?
রনি: আল্লাহ্ তা’আলা যদি তৌফিক দান করেন, তাহলে ইচ্ছা আছে একবার ভিরাট কোহলিকে আউট করতে চাই।
-নিজের বোলিং দক্ষতায় কি কি যোগ করতে চান?
রনি: নিজের মাঝে কনফিডেন্স আনতে চাই যেন যেমনটা ডেলিভারি দিতে চাই, তা যেন দিতে পারি। যা এখনো পারি, তা আরো ঘষামাজা করা, সিচ্যুয়েশন বুঝে বোলিং করতে পারা, নতুন বলে লাইন-টু-লাইন বোলিং, সুইং, কখনো পুরনো বলে স্লোয়ার, ইয়র্কার।
-যদি বলা হয় নিজেকে ১০ এর ভেতর মূল্যায়ন করুন, কত দিবেন?
রনি: এটা খুব কঠিন। কারণ, প্রফেশনাল ক্রিকেটারদের উত্থানপতন থাকে। তবে, প্রিমিয়ারলীগ নিয়ে বললে ১০ এর ভেতর ১০ এর কাছাকাছিই দিব, সাড়ে নয় বা নয়। কারণ, কন্ডিশন খুব টাফ ছিল। আলহামদুলিল্লাহ্, তাও ভাল বোলিং হয়েছে। আর, সবমিলিয়ে আট বা সাড়ে সাত দিব। কেননা, এখনো অনেক কিছু শেখার বাকি আছে।
-ডিপিএলে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী আপনি, সেজন্যে অভিবাদন। ডিপিএল নিয়ে সেরা মুহূর্ত?
-ধন্যবাদ। সেরা মুহূর্ত বলতে, সুপারলিগে শেখ জামালের বিপক্ষে ছয় উইকেট নিয়েছিলাম। নতুন বলে তিনটি এবং স্লগে এসে আবার তিনটি উইকেট নিয়েছিলাম।
-ড্রেসিংরুমের কোনো অভিজ্ঞতা-
রনি: সব ক্রিকেটারেরই জাতীয়দলের হয়ে খেলার স্বপ্ন থাকে। আমার সেই স্বপ্ন পুরণ হয়েছিল। জাতীয় দলের হয়ে ড্রেসিংরুমে যোগ দেয়া, মাশরাফি ভাই, সাকিব ভাইদের কাছে পাওয়া-অন্যরকম ভাল লাগা ছিল।
-প্রিয় খাবার?
রনি: ভুনাখিচুড়ি।
-অবসর পেলে যেতে চাইবেন যেসব জায়গায়-
রনি: অবসর পেলে পরিবারকে সময় দিতে চাইব।
-বিপিএলের তৃতীয় আসরে অসাধারণ পার্ফরমেন্স এরপর জাতীয়দলেও ডাক, এরপর ছিটকে পড়া… জাতীয় দল নিয়ে কোনো ভাবনা? নিজেকে কোথায় দেখতে চান?
রনি: আসলে, আগেও যেমনটা বলেছিলাম যে, ক্রিকেটারদের উত্থানপতন থাকেই। কখনো খেলায় রিদম থাকে, কখনো সময় যেন বিপরীতে যায়। আমার কিছু ভুল ছিল, নার্ভাস ছিলাম। তবুও, বলব, এখনো বয়স কম, ভাল করলে ইন শা আল্লাহ্ সুযোগ পাব। সুযোগ পেয়ে লং টার্ম কন্ট্রিবিউট করার ইচ্ছা।
-সাম্প্রতিক চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিয়ে কোনো মতামত, পরামর্শ বা প্রত্যাশা?
রনি: এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ইংল্যান্ডে হচ্ছে, অনেক দলই বৃষ্টির জন্য ঠিকমতো খেলতে পারেনি। অস্ট্রেলিয়ার মত দল দু’টো ম্যাচে কোনো ফল পায়নি। বাংলাদেশের জন্য এখনো সুযোগ আছে। আশা করি নিউজিল্যান্ডকে হারাব আমরা- শুভকামনা থাকলো।
-ধন্যবাদ রনি। সমর্থকদের উদ্দেশ্যে যদি কিছু-
রনি: ধন্যবাদ আপনাকেও। সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বলতে, বলব পাশে থাকবেন, দু’আ করবেন। বিশেষ করে, খারাপ সময়ে বেশি পাশে থাকবেন। বেশি করে দু’আ করবেন যেন ভাল খেলতে পারি, দেশের জন্য কিছু করতে পারি।