

নিয়তি কাকে কখন কোথায় নিয়ে যায় তার হিসাব মেলানো আসলেই মাঝেমধ্যে দায় হয়ে পড়ে। নিউজিল্যান্ডের প্রধান কোচ গ্যারি স্টিডের জীবনের গল্পটাও অনেকটা এমনই, যে গল্প তাকে লর্ডস ক্রিকেট মাঠের মাঠকর্মী থেকে চলতি বিশ্বকাপের ফাইনালিস্ট দলের প্রধান কোচের আসনে বসিয়েছে। বিশ্বকাপ শিরোপা জয় থেকে মাত্র এক ম্যাচ দূরে দাঁড়িয়ে স্টিড, ফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারালেই ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন এই কিউই কোচ।

বয়স ৪৭, ক্রিকেট তার জীবনে জড়িয়ে ওতপ্রোতভাবে। ছিলেন মাঠকর্মী, খেলেছেন নিউজিল্যান্ডের হয়ে টেস্ট ক্রিকেট, এরপর যুক্ত হলেন কোচিংয়ে পুরো গল্পটাই যেন সিনেমা। ১৯৯০ সালে লর্ডসে কাজ পেয়েছিলেন মাঠকর্মী হিসেবে, করতে হয়েছে গ্লাস পরিষ্কার থেকে স্কোরকার্ড বিলিও। অথচ ওই লোকটিই কিনা আজ একটি বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলা দলের কোচ! মাঠকর্মীর কাজ করলেও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটার বাবা ডেভিড স্টিডের দেখানো পথেই হেঁটেছেন গ্যারি স্টিড।
নিউজিল্যান্ডের হয়ে খেলেছেন টেস্ট যদিও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের ফর্ম টেনে নিতে পারেননি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। প্রায় ৫ হাজার প্রথম শ্রেণি রানের মালিক পাঁচ টেস্টে রান করেছে সর্বসাকুল্যে ২৭৮! মাত্র ৯ মাসেই ইতি ঘটে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের। ১৯৯৯ সালের মার্চে অভিষেক হওয়া গ্যারি শেষ ম্যাচ খেলেন সেবছরই ডিসেম্বরে। নিজের শুরুর দিন গুলো তুলে ধরতে গিয়ে বলেন,’ ১৯৯০ সালে আমি এখানকার (লর্ডস) ভাগ্যবান মাঠকর্মী ছিলাম। স্কোরকার্ড বিলি, গ্লাস পরিষ্কার ছিল মূলত আমার কাজ।’
ক্রিকেটের মক্কা খ্যাত লর্ডসের মাঠকর্মী এখন একটি শক্তিশালী জাতীয় দলের কোচ। দুই যুগের বেশি সময় পর লর্ডসে ফিরেছেন মাঠকর্মী পরিচয় অতীত করে একজন কোচ হিসেবে। ফাইনালের আগেই এখানে কোচ হিসেবে এসেছেন স্টিড, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লিগ পর্বের ম্যাচে তবে এবার শিরোপা জয়ের ম্যাচ অনুভূতি নিশ্চয়ই ভিন্নরকম, স্টিড জানালেন,’ এখানে ফিরে আসা বিশেষ অভিজ্ঞতা আমার জন্য। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটিও অন্যরকম অভিজ্ঞতার ছিল, এখন এটাকে আরও বড় উপলক্ষ বানাতে চাই।’
মূলত কোচ হিসেবে খুব জনপ্রিয় কেউ নন, নিউজিল্যান্ড মহিলা দলের সাফল্য এনে দেওয়ার পুরষ্কার হিসেবে গতবছর আগস্টে পুরুষ জাতীয় দলের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয় তার হাতে। বিশ্বকাপে ফেভারিটের তকমা গায়ে না লাগলেও অবিশ্বাস্য পারফরম্যান্সে ভারতকে সেমিতে হারিয়ে ফাইনালে তার দল, স্টিড বলছেন লক্ষ্য ছিল এমন কিছুই, ‘আমাদের তিনটি লক্ষ্য ছিল দল হিসেবে। দুটি পূরণ হয়েছে (সেমিফাইনাল, ফাইনাল)। আরেকটির জন্য ফাইনালে মাঠে নামবো।’