

বাংলাদেশের পোস্টারবয় সাকিব আল হাসানের মুকুটে অনেক অর্জনের পালক থাকলেও বিশ্বকাপে ছিলেন নিজের ছায়া হয়ে। চলতি বিশ্বকাপে ব্যাটে বলে দুর্দান্ত ফর্মে দলে রেখেছেন অসামান্য অবদান তবে বাকীদের অনুজ্জ্বলতায় দলীয় অর্জনের খাতাটা হয়নি ভারী। দেশ ছাড়ার আগে বলে গিয়েছিলেন সেমিফাইনাল খেলতে চান, নিজে ক্যারিয়ারের সেরা ফর্ম দিয়েও পারেননি সে স্বপ্ন পূরণ করতে। হতাশায় পুড়ছেন সাকিব, ব্যক্তিগত অর্জনের চাইতে দলীয় সাফল্যই তার কাছে বড়।
৮ ম্যাচে তিন জয়, বৃষ্টিতে ভেসে গেছে একটি। সেমিফাইনাল খেলার স্বপ্ন বাস্তবায়নে কোনভাবেই যথেষ্ট নয় । কয়েকটি ম্যাচে তীরে গিয়ে ডুবেছে তরী, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচটা হাতের মুঠো থেকে ফসকে গেছে, এদিকে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচেও লক্ষ্য তাড়ায় শুরুর ব্যাটসম্যানদের দায়িত্বহীন ব্যাটিংয়ে সঙ্গী হয়ে ২৮ রানের হার।
তিন ম্যাচ জিতলেও বাকী ম্যাচগুলোয় ছিল ভালো ক্রিকেট খেলার ছাপ, প্রশংসা কুড়িয়েছে দেশী-বিদেশী রথী-মহারথীদেরে। তবে সেমিফাইনাল খেলার স্বপ্ন নিয়ে যাওয়া একটা দল শুধু ভালো খেলার প্রশংসা নিয়ে ফিরে আসবে এমনটায় তৃপ্ত নন নাম্বার ওয়ান অলরাউন্ডার। ইতিহাস ভালো খেলার কথা লেখেনা, লেখে হেরেছে কি জিতেছে!
হতাশা মোড়ানো সুরে সাকিব এ নিয়ে নিজের আক্ষেপ তুলে ধরতে গিয়ে বলেন,“ এটা ঠিক যে আমরা ভালো ক্রিকেট খেলেছি। কিন্তু আমরা এখানে ভালো ক্রিকেট খেলতে আসিনি, আমরা জিততে এসেছি। কিন্তু আমরা সেটা পারিনি। আমার মনে হয় এটা সত্যি হতাশাজনক কারণ এতবড় মঞ্চে আমরা আমাদের স্বপ্ন পূরণ করতে পারিনি। এদিক থেকে আমি খুবই হতাশ, কিছু ছোট ছোট জিনিস যদি আমরা আরও ভালোভাবে করতে পারতাম ফল আরও ভালো হত।”
ভারত ম্যাচে হারের পর শুধু রোহিত শর্মার ক্যাচ মিস নয় সাকিব বলছেন শুরুর বাজে বোলিংই পিছিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশকে, “ এটা (এজবাস্টনের উইকেট) ব্যবহৃত উইকেট ছিল। এখানে ২৮০-২৯০ নাগালের ভেতর কিন্তু ৩০০ ছাড়িয়ে গেলেই কঠিন। প্রথমত আমরা খুব বাজে বোলিং করেছি, যা আমাদের হারের মূল কারণ। আর ক্যাচটিও যদি নেওয়া যেত ফল ভিন্ন হতে পারত, সুযোগ পেয়ে সে দারুণভাবে কাজে লাগিয়েছে যার চড়া মূল্য আমাদের দিতে হয়েছে। এদিকে বাজে ফিল্ডিংও হয়েছে, মূলত দুটোর সংমিশ্রণেই হার।”
ব্যাটে-বলে ব্যক্তিগত অর্জনে রেকর্ডময় একটি টুর্নামেন্ট সাকিবের জন্য। ৫০০ এর বেশি রান, বল হাতে ১০ উইকেট, বিশ্বকাপে এমন মাইলফলকে পৌছানো সাকিবই যে একমাত্র ক্রিকেটার। সাকিব বলছে বাকী ম্যাচেও থাকতে চান ধারাবাহিক, দলে অবদান রাখাতেই তৃপ্তি বেশি, “আমি এখনো পর্যন্ত যা করছি তা করার মাধ্যমে বিশ্বেকাপ শেষের চেষ্টা করবো, তবেই ব্যক্তিগত দৃষ্টিকোণ থেকে খুশি হব। দলের জয়ে অবদান রাখাতেই আমার আনন্দ, আর এটা করতে পারলে আরও বেশি সন্তুষ্টবোধ করি।”