

বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের অধিনায়ক ও নড়াইল ২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মর্তুজাকে নিয়ে কটু মন্তব্য করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করায় কারণ দর্শানো নোটিশ পাওয়া চিকিৎসক রেজাউল করিমকে বদলি করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তার দাবি মাশরাফিকে নিয়ে মন্তব্যের জের ধরেই তার বদলি আদেশ হয়েছে, অন্যদিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে নিয়ম অনুসারেই সরকারিভাবে হয়েছে রেজাউল করিমের বদলি।

গত ২৫ এপ্রিল বিকেলে নড়াইল সদর হাসপাতাল পরিদর্শনে যান মাশরাফি বিন মর্তুজা। সরজমিনে গিয়ে দেখেন সূচী অনুযায়ী যেসব চিকিৎসকের কর্তব্যরত অবস্থায় থাকার কথা ছিল তাদের অনেকেই অনুপস্থিত। হাসপাতালের তত্বাবধায়কের সাথে কথা বলার পাশাপাশি মাশরাফি ফোনে কথা বলেন অনুপস্থিত চিকিৎসকের সাথেও। সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক আকরাম হোসেনের সাথে মাশরাফি দায়িত্বে অবহেলার জন্য একটু কড়া সুরে কথাও বলেন।
মাশরাফির হাসপাতাল পরিদর্শনের ওই ভিডিও মুহুর্তেই ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এর প্রেক্ষিতেই দেশব্যাপী চিকিৎসকরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা বিব্রতকর পোস্ট দিয়ে মাশরাফিকে বিদ্রুপ করে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটান। যার মধ্যে ছিলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের শিশু ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক রেজাউল করিমও। ঘটনার পরপরই তাকে সহ মোট ৬ জনকে কারণ দর্শানো নোটিশ পাঠায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
ঘটনার দুই মাসপর সম্প্রতিক তাকে বদলি করা হয়েছে রাঙ্গামাটি মেডিকেল কলেজে, যেখানে নেই ক্যান্সার নিরাময়ের কোন আধুনিক সুযোগ সুবিধাদি, উপজাতিদের মধ্যে লেগে আছে বিদ্রোহ। এছাড়া তার এই হঠাত বদলিকে তিনি দেখছেন অপ্রাসঙ্গিক প্রক্রিয়া হিসেবে, “আমাকে রাঙ্গামাটি মেডিকেল কলেজে বদলি করা হয়েছে। যেখানে ক্যান্সার চিকিৎসার প্রয়োজনীয় উপকরণ নেই। আমার কাছে পুরো ব্যাপারটি অপ্রাসঙ্গিক মনে হচ্ছে।”
এদিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি সেক্রেটারি মহসিন উদ্দিন, বদলি আদেশে যার স্বাক্ষরও ছিল, তিনি বলছেন কোন শাস্তি নয় রেজাউল করিমের বদলি আদেশ হয়েছে প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে। কিন্তু দেশের এই প্রখ্যাত শিশু ক্যান্সার বিশেষজ্ঞের বদলিতে ভোগান্তিতে পড়তে হবে রোগীদের। তথ্যমতে প্রতিদিন শতাধিক ক্যান্সার আক্রান্ত শিশু ভর্তি হয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ, যাদের প্রত্যক্ষ তত্বাবধনে থাকেন ডাঃ রেজাউল করিম।
প্রসঙ্গত মাশরাফি ইস্যুতে গত ২৮ এপ্রিল নিজের ফেসবুক টাইমলাইনে এই শিশু ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ লিখেন, “বাংলাদেশের ডাক্তারদের বোল্ড করতে বড়ই আনন্দ। ম্যাশ চিকিৎসার জন্য অনেকবারই ডাক্তারদের ছুরি কাঁচির নিচে গেছেন। তাদের অনেক তোয়াজ করতে হইছে। সেই ডাক্তারদের বংশবদ পাইছি এবার।”