

লক্ষ্য ৩৫৩ রানের। এই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে লড়াইটা মূলত ছিল ভারতের বৈচিত্রময় বোলিং লাইনআপের সামনে অজি ব্যাটসম্যানদের। যেখানে নিজেদের কাজটা বেশ দুর্দান্তভাবেই করে দেখালেন বুমরাহ-ভুবনেশ্বর-চাহালরা। জয়ের বেশ কাছে চলে যাওয়া অজিদের শেষ পর্যন্ত ৩১৬ রানে বেধে রেখে ম্যাচ জিতে নিলেন ৩৬ রানের ব্যবধানে।
সাড়ে তিনশো’র উপরে রান তাড়া করতে নেমে নিজেদের ইনিংসের শুরুটা দেখেশুনে করেন অস্ট্রেলিয়ার দুই ব্যাটসম্যান অ্যারন ফিঞ্চ ও ডেভিড ওয়ার্নার। একপাশ থেকে অধিনায়ক ফিঞ্চ বলের সাথে পাল্লা দিয়ে রানের যোগান দিলেও অপর পাশে নিজেকে যেন গুটিয়েই রেখেছিলেন ওয়ার্নার।
তবে বিপত্তিটা বাঁধল ইনিংসের ১৪ তম ওভারে। হার্দিক পান্ডিয়ার করা বলটা ওয়ার্নার অফ সাইডে ঠেলে দিয়ে ২ রান নিতে গেলে রান আউটে কাটা পরেন নন স্ট্রাইক অ্যান্ডের ব্যাটসম্যান ফিঞ্চ, ৩৬ রানে ফিঞ্চ আউট হয়ে গেলে ভাঙে ৬১ রানের পার্টনারশিপ। এরপর নতুন ব্যাটসম্যান স্টিভ স্মিথকে নিয়ে ইনিংস মেরামতের কাজ শুরু করেন ওয়ার্নার, দেখেশুনে খেলে তুলে নেন নিজের অর্ধতকটা। পরে অবশ্য নিজের ইনিংসটাকে আর বড় করতে পারেননি এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান, চাহালকে উইকেট দিয়ে এসেছেন ব্যক্তিগত ৫৬ রানে।
সেখান থেকে স্মিথ (৬৯,) উসমান খাজা (৪২), ম্যাক্সওয়েলরা (২৮) চালিয়ে যান নিজেদের চেষ্টা। কিন্তু ভুবনেশ্বর-চাহালরা নিয়মিত বিরতিতে উইকেট নিলে কমে আসে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার জয়ের সম্ভাবনা। তবে শেষদিকে নাটক জমিয়ে তোলেন অজিদের উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান অ্যালেক্স ক্যারি। ঝড়ো ব্যাটিংয়ে জয়ের বেশ কাছে নিয়ে যান দলকে, শেষ পর্যন্ত তাকে কেও সঙ্গ দিতে না পারলে অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ হেরে বসে ৩৬ রানের ব্যবধানে। অ্যালেক্স ক্যারি অপরাজিত থাকেন ৫৫ রান নিয়ে।
এর আগে ম্যাচের শুরুতে টসে জিতে ভারতের হয়ে শিখর ধাওয়ানকে নিয়ে নিজেদের ইনিংসের গোড়াপত্তন করতে আসেন আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান রোহিত শর্মা। উদ্বোধনী জুটিতে দুর্দান্ত শুরু এনে দেন দুজন। দলীয় ১২৭ রানের মাথায় ভারতীয় শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন কোল্টার নেইল, ফেরান ৫৭ রানে থাকা রোহিতকে। এরপর ভিরাট আর ধাওয়ান মিলে শাসন করতে থাকেন অস্ট্রেলিয়ান বোলারদের, এরই এক ফাঁকে চলতি বিশ্বকাপে নিজের প্রথম সেঞ্চুরিটা তুলে নেন ধাওয়ান।
এরপর অবশ্য বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানকে প্যাভিলিয়নের পথ ধরিয়েছেন মিচেল স্টার্ক, আউট হওয়ার আগে ১০৯ বলে ১১৭ রানের ইনিংসটি ধাওয়ান সাজিয়েছেন ১৬টা চারের সাহায্যে। ধাওয়ান আউট হওয়ার পর উইকেটে শুরু হয় ভিরাট কোহলি আর হার্দিক পান্ডিয়া শো।
চার নম্বর পজিশনে ভারতীয় দলের আস্থা অর্জন করা লোকেশ রাহুলকে টপকে কোহলিকে সঙ্গ দিতে পাঠানো হয় পান্ডিয়াকে, তবে সঙ্গ দিতে এসে যেন আলোটাই কড়ে নিলেন এই অলরাউন্ডার। চার-ছয়ের ফুলঝুরিতে একের পর এক বাউন্ডাড়ির বাইরে আছড়ে ফেলেছেন জাম্পা, কামিন্সদের। পরে অবশ্য কামিন্সেরই শিকারে পরিণত হয়েছেন তিনি, তবে যাওয়ার আগে ৪টা চার ও ৩টা ছয়ের মারে ২৭ বলে খেলে গেছেন ৪৮ রানের ইনিংস।
এরপর ধোনিকে নিয়ে দলকে বিশাল রানের দিকে ছুটতে থাকেন ভিরাট, তবে ধোনিও ১৪ বলে ২৭ রান করে আউট হয়ে গেলে রান তোলার গতিটা কমে আসে। শেষ পর্যন্ত কোহলিও আউট হয়ে যান ৮২ রান করে। ফলে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৫ উইকেট হারিয়ে স্কোর বোর্ডে ৩৫২ রানের পুঁজি পায় ভারত।