

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচের আগেও মাশরাফি দলকে নিয়ে কটু মন্তব্যের ব্যাপারে নাখোশ ছিলেন। এবার নাখোশ হলেন সাংবাদিকদের করা অপ্রিয় প্রশ্নে। অনেকটা রাগান্বিত হয়েই জবাব দিলেন সেই প্রশ্নের। সাথে এটাও বুঝিয়ে দিলেন নেতা হিসেবে তিনি দলকে আগলিয়ে রাখতে জানেন।

সন্দেহাতীত ভাবেই এবারের বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা দল বাংলাদেশ। বড় কাপ জেতার অভিজ্ঞতা নেই বলে হয়ত বিশ্বকাপের দাবিদার বলছেনা কেও এখনই, কিন্তু সেমি ফাইনালে খেলার জন্যে সবচেয়ে বড় ডার্ক হর্স এই অভিজ্ঞ বাংলাদেশ দলটা। নতুন পুরনোর চমৎকার মিশেলে এই দলটা যে কোন দলকে বলে কয়ে হারাতে পারে এখন। সেকারনে ভক্ত সমর্থকদের পাশাপাশি ক্রিকেটের সাথে যুক্ত সকলেরই যেন প্রত্যাশার পারদটা অনেক উঁচুতে এবারের বিশ্বকাপে লাল সবুজের দলটিকে নিয়ে।
তারই প্রতিফলন হিসেবে নিউজিল্যান্ডের সাথে ম্যাচটায় শেষ দিকে এসে করা ওভার গুলোতে এক স্বদেশী সাংবাদিক প্রশ্ন করে বসেন, তখন বাংলাদেশ কি রক্ষণাত্মক ফিল্ডিং সাজিয়েছিলেন? এমন অপ্রিয় প্রশ্ন গিয়েছিল মাশরাফির কাছে। সেদিন কিউইদের জিততে যখন ৩৬ বলে দরকার ২৩, হাতে আছে ৩ উইকেট। মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের বলে স্লিপ গলে বেরিয়ে যায় বাউন্ডারি। কমে যায় চাপ।
তখন ফিল্ডিং কি আরো আক্রমণাত্মক ভাবে সাজানো যেত না? মাশরাফির মতে রক্ষণাত্মক নয়, পরিস্থিতি মাথায় রেখেই ফিল্ডিং সাজাতে হয়েছে তাদের। হারার পরই এসব কাঁটাছেড়ায় বড্ড আপত্তি অধিনায়কের, ‘হারলে আসলে কোনটা রক্ষণ কোনটা আক্রমণ আমি জানি না। আপনারা বিশ্লেষণ তো কম করেন না, কাকে কোথায় অ্যাটাক করতে হয় সেটাও আপনারা ভালো বুঝেন। হারলেই আপনারা প্রশ্ন বদলে ফেলেন। আমার কাছে মাঝেমাঝে ব্যাপারটা বোধগম্য না, মনে হয় আপনারা এভাবেই কাজ করেন কিনা।’
অল্প রানের পুঁজি নিয়েও খুব কাছে গিয়েও জয় আসেনি। এখানে কৌশলের কোন কমতি দেখছেননা কাপ্তান। ‘হ্যাঁ রক্ষণাত্মক কোথাও ছিল না। যাকে আক্রমণ করার দরকার করা হয়েছে। দিনশেষে কিন্তু বোলারের বিষয় ফিল্ডিং এ কে কোথায় থাকবে। বোলার কি চায়। পরিস্থিতির উপরও নির্ভর করে। সব কিছু মাথায় রেখে ফিল্ডিং সাজিয়েছি। উইলিয়ামসন বলেন বা টেইলর বলেন ওদের কথা মাথায় রেখে সাজাতে হয়। তো আমরা আমাদের সেরা চেষ্টা করেছি। সব সময় উপরে ফিল্ডার রেখে বোলিং করেছি। কাজেই শুধু ফলের দিকে না তাকিয়ে কথা বললে ভাল হয়।’

মুশফিকের রান আউট মিসের প্রসঙ্গেও অনেক সমর্থিত ভূমিকায় দেখা যায় মাশরাফিকে। ‘মুশফিক পুরোপুরি ঠিক আছে। স্বাভাবিক না থাকার কারণ নেই। যারা কাজ করে, তাদের সমালোচনা হবে, খুবই স্বাভাবিক। বসে বসে সমালোচনা করা খুবই সহজ। দল থেকে সমর্থন সবাই সবাইকে করছে।’
জানালেন নিজের খেলা নিয়েও অসন্তুষ্টির কথা। বলেছেন, ‘শুধু মুশফিক নয়, আমিও এখনও আমার সেরাটা করতে পারিনি। আরও অনেকে নিজের সেরাটা দিতে পারেনি। এটা ক্রিকেটে হয়ই, সাধারণ ব্যাপার। যারা স্বাভাবিক ভাবে নিতে পারছে না, তারা এসব বলছে। খুবই স্বাভাবিক। তবে মুশফিক এখনও ভালো আছে।’ শেষে ইংল্যান্ড ম্যাচের ব্যাপারে বলেন, ‘প্রথমত হচ্ছে যে ইংল্যান্ড যে ধরনের ক্রিকেট খেলে ওদের সঙ্গে রক্ষনই হচ্ছে ইতিবাচক ক্রিকেট। কারণ ওরা গত চার বছরে দেখে যেকোনো পরিস্থিতি আক্রমণাত্মক মানসিকতায় থাকে। সব সময়ই চায় সাড়ে তিনশো, চারশো রানে যেতে।’