

মিচেল স্টার্ক, গতির ঝড়ে ছিন্নভিন্ন করেন বাঘাবাঘা ব্যাটসম্যানের স্টাম্প। এবারের বিশ্বকাপে যেকজন পেসারের দিকে নির্দিষ্ট করে চোখ রাখতে হয়, তাদের মধ্যে স্টার্ক আছেন সবার উপরে। অথচ এই গতিতারকাই কিনা ক্যারিয়ার শুরু করেছেন উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান হিসেবে, পরবর্তী জীবনেও জড়িয়ে আছেন উইকেটরক্ষকের সাথে।
গতকাল (বৃহস্পতিবার) উইন্ডিজের বিপক্ষে জয়ী ম্যাচে নিয়েছেন ৫ উইকেট, গড়েছেন রেকর্ড। এবারের বিশ্বকাপের প্রথম ‘ফাইফার’ তারই, ক্যারিবিয়ানদের জয় বঞ্চিত করতে তার ৪৬ রানে নেওয়া ৫ উইকেটই যথেষ্ট ছিল।
কালসহ বিশ্বকাপে এ নিয়ে মোট দুবার ফাইফারের দেখা পেলেন ২৯ বছর বয়সী এই অজি পেসার। ফলে মাত্র ৬ষ্ঠ বোলার হিসেবে ঢুকে পড়লেন বিশ্বকাপে দুবার ফাইফার নেওয়াদের ক্লাবে। তবে আরেকবার পাঁচ উইকেটের সাক্ষাৎ পেলেই স্টার্ক গড়বেন একক রেকর্ড, প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে বিশ্বকাপে তৃতীয় ফাইফার তার হাত ধরেই আসবে। দুবারের বেশি যে নাই কারও।
কাল গড়েছেন আরও একটি রেকর্ড, দ্রুততম ১৫০ ওয়ানডে উইকেটের মালিক এখন এই অজি পেসার। পেছনে ফেলেছেন পাকিস্তানের সাবেক অফ স্পিনার সাকলাইন মুস্তাককে, ৭৭ ম্যাচেই ১৫০ ছোঁয়া স্টার্ক অতীত করে দিয়েছেন সাকলাইনের ৭৮ ম্যাচে নেওয়ার রেকর্ডকে।
অথচ ভাবা যায় আপাদমস্তক একজন পেসার, ২২ গজে রীতিমত ঝড় তুলে চলা স্টার্ক ক্রিকেটে এসেছেন উইকেট কিপার হিসাবে? স্বদেশী তারকা উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান অ্যাডাম গিলক্রিস্টকে আদর্শ মেনে ক্রিকেটে আসা স্টার্ক শখের বসে নেটে করতেন পেস বোলিং। ঘরোয়া দল নিউ সাউথ ওয়েলসের নেটে ৬ ফুট ৫ ইঞ্চি উচ্চতার এই পেসারকে দেখেই চোখ চকচক করে স্থানীয় কোচের। এরপরই ৫-৭ এ ব্যাট হাতে নামা এক উইকেটরক্ষক পরবর্তী ক্যারিয়ারে হয়ে পড়েন দুর্দান্ত পেসার।
ব্যাটসম্যানদের চোখের ঘুম কেড়ে নেওয়া এই পেসার এরপর কমিয়েছেন ব্যাটিংয়ে মনযোগ। ৫-৭ নয়, নামেন ৮/৯ নম্বরে, তবে বল হাতেই প্রতিপক্ষের বুকে কাঁপন ধরিয়ে দেন স্টার্ক। ২২ উইকেট নিয়ে গত বিশ্বকাপে হয়েছিলেন ম্যান অব দ্যা টুর্নামেন্ট, দলের শিরোপা জয়ের অন্যতম নায়ক।
নিজে উইকেট কিপিং ছাড়লেও সংসার করছেন উইকেট কিপার নিয়েই। গত বিশ্বকাপের ১৭ দিন পর অস্ট্রেলিয়া নারী ক্রিকেটার অ্যালিসা হিলিকে বিয়ে করে শুরু করেন নতুন ইনিংস। মজার বিষয় দলে অ্যালিসা হিলির ভূমিকা উইকেট কিপার ব্যাটসম্যান, যিনি আবার সাবেক অস্ট্রেলিয়া জাতীয় দলের উইকেটরক্ষক ইয়ান হিলির ভাতিজি।