

দ্বাদশ তম বিশ্বকাপ শুরু হতে আর বাকি তিন দিন। এরই মধ্যে শেষ হয়েছে সকল প্রস্তুতি, অপেক্ষায় এখন কেবলই বাইশ গজের মহারনের। আগামী ২ জুলাই দ্য ওভালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপের মূল মঞ্চে মাঠে নামার আগে ওয়েলসের সোফিয়া গার্ডেনে দুটো গা গরম ম্যাচ খেলতে গেছিলো বাংলাদেশ দল, যেখানে পাকিস্তানের বিপক্ষে শুরুর ম্যাচটা পণ্ড হয়েছে বৃষ্টি বাধায়, আজ দ্বিতীয়টাতে ভারতের বিপক্ষে হার ৯৫ রানে।
ম্যাচে ভারতের দেওয়া ৩৬০ রানের পাহাড় টপকাতে নেমে দলের নিয়মিত ওপেনার তামিম ইকবালকে ছাড়া শুরুটা বেশ দেখেশুনেই করেছিলো দুই ব্যাটসম্যান লিটন কুমার দাস ও সৌম্য সরকার। তবে সেট হয়েও নিজের ইনিংসটাকে বড় করতে পারেননি সৌম্য, জাসপ্রিত বুমরাহকে উইকেট দিয়ে ফিরেছেন ব্যক্তিগত ২৫ রানে। সৌম্যকে আউট করার ঠিক পরের বলেই সাকিবকেও একই পথের সারথি বানিয়েছেন এই পেসার।
৪৯ রানে দুই উইকেট হারানো বাংলাদেশকে পরে পথ দেখাতে থাকে লিটন-মুশফিক জুটি, উইকেটে থিতু হয়ে দুজন গড়েছেন ১২০ রানের জোট। তবে ৭৩ রানে থাকা লিটন মনযোগ হারিয়ে উইকেট দিয়ে আসেন চ্যাহালকে, পরের বলেই প্যাভিলিয়নের পথ ধরেছেন মিঠুনও। এরপর নতুন ব্যাটসম্যান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও ৯ রান করে আউট হয়ে গেলে চাপের মুখে পড়ে যায় টাইগাররা।
সে চাপেই যেন পিষ্ট হয়েছেন মুশফিকুর রহিম, সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ১০ রানে আগে অর্থাৎ ৯০ রানে আউট হয়েছেন কুলদ্বীপ যাদবের বলে। এবারও হল তেমনটাই, সতীর্থদের দেখানো পথ অনুসরণ করে আগের দুইবারের মত পরের বলেই আউট হয়ে ফিরলেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতও। এরপর সাইফউদ্দিন-মিরাজরা চেষ্টা চালালেও লাভ হয়নি তাতে। মাত্র ২৬৪ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস। ফলে ৯৫ রানে ম্যাচ হেরে শূন্য হাত দিয়ে কার্ডিফ থেকে ওভালে যেতে হচ্ছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের।
এর আগে ম্যাচের শুরুতে টস জিতে প্রতিপক্ষকে আগে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান টাইগার দলপতি মাশরাফি বিন মর্তুজা। দুই দল মাঠে নামলে বৃষ্টি বাধায় ৩ বল খেলেই ছড়তে হয় মাঠ। এরপর আবার ম্যাচ শুরু হলে বল হাতে অগ্রিমূর্তি ধারণ করেন বাংলাদেশি বোলাররা, দলীয় ৫ রানের মাথায় ভারতীয় ওপেনার শিখর ধাওয়ানকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান মুস্তাফিজুর রহমান। এরপর আরেক ওপেনার রোহিত শর্মাকে নিয়ে ইনিংস মেরামতের কাজ শুরু করেন তিনে ব্যাট করতে আসা ভিরাট কোহলি।
তবে সেই জুটিকে খুব বড় হতে দেননি রুবেল হোসেন, রোহিতকে আউট করে ভেঙেছেন ৪৫ রানের পার্টনারশিপ। সেখান থেকে দলীয় ৮৩ রানে ৪৭ রানে থাকা কোহলিকে মোহাম্মদ সাইফদ্দিন আউট করলে খানিক পরেই আবার আঘাত হানেন রুবেল হোসেন, নিজের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত করেন বিজয় শঙ্করকে। ১০২ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে যখন ধুকছে ভারত, ঠিক তখনই দলের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন লোকেশ রাহুল। টাইগার বোলারদের রীতিমত শাসন করে ধোনির সাথে গড়েন ১৬৪ রানের জুটি।
এরই এক ফাকে রাহুল তুলে নেন নিজের শতকটা, সাব্বির রহমানকের উইকেট দেওয়ার আগে ১২ চার ও ৪টা ছয়ের সাহায্যে ৯৯ বলে খেলে যান ১০৮ রানের ইনিংস। রাহুল আউট হলেও এদিন যেন থামানোই যাচ্ছিলো না মাহেদ্র সিং ধোনির ব্যাট, হার্দিক পান্ডিয়াকে সাথে নিয়ে ধ্বংসলীলা চালাতে থেকেন ধোনি। তবে ১১ বলে ২১ রান করে সাকিব শিকারে পরিণত হন পান্ডিয়া।
তাতে অবশ্য একেবারেই সমস্যা হয়নি ভারতের। এরপর নিজের ব্যক্তিগত শতকটা তুলে নিয়েছেন ধোনিও, শেষ ওভারে সাকিবের বোলে বোল্ড হওয়ার আগে ৮টা চার ও ৭টা ছয়ের মারে খেলে যান ৭৮ বলে ১১৩ রানের বিধ্বংসী এক ইনিংস। আর এতেই নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে ৩৫৯ রানের বিশাল পুঁজি পায় ভারত, জয়ের জন্য বাংলাদেশ দলের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩৬০ রানের।