
ভারতের হয়ে ১০ টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন আকাশ চোপড়া। ৪১ বছর বয়সী সাবেক এই ব্যাটসম্যান বর্তমানে ক্রিকেট বিশ্লেষক ও ধারাভাষ্যকার হিসাবে পরিচিত। আকাশ চোপড়া আসন্ন বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের শক্তিমত্তা, সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলেছেন নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক প্রোফাইলে।

‘এশিয়ায় যদি ভারতের পর কোন দলের দাপট থেকে থাকে তাহলে সেটা এখন আর পাকিস্তান নয়, সেটা বাংলাদেশ। ২০১৫ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ কোয়ার্টার ফাইনালে খেলেছিল, ২০১৭ এর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশ খেলেছিল সেমিফাইনালে। এশিয়া কাপে তো খেলেছিল ফাইনালেই। তো এই দলকে যদি আপনি হালকা ভাবে নেন তাহলে আপনি মস্ত বড় ভুল করছেন। বিশ্বকাপে এই দল ভালো খেলবে। অন্তত ৯ ম্যাচ ওরা খেলবে, আর ম্যাচও জিতবে। হ্যা, শিরোপার দাবিদার হয়তো আমি বলবো না, তবে নক আউটে যে যাবে সেটা আমি বলতে পারি।’
‘বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে যদি নজর দেই তাহলে তামিম ইকবাল দারুণ এক ব্যাটসম্যান। সাম্প্রতিক সময়ে বেশ ফর্মেও আছেন তিনি। তামিমের সঙ্গে ওপেন করতে পারেন সৌম্য সরকার বা লিটন দাস। লিটন দাস এশিয়া কাপের ফাইনালে দারুণ এক ইনিংস খেলেছিলেন। সৌম্য উপরেও ব্যাট করতে পারেন, নিচেও ব্যাট করতে পারেন সাথে বোলিংটাও ঠিকঠাক করেন। সৌম্য সরকার দলে বৈচিত্র্য আনতে পারেন।’

‘এরপর আসবেন সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম। এই দলকে একটা জিনিস মাথায় রাখতে হবে যে তাঁরা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে কিভাবে ব্যবহার করবেন। উনি এমন একজন ক্রিকেটার যার সামর্থ্য আছে। গত বিশ্বকাপেও সে দুইটি সেঞ্চুরি করেছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক ভাবে রিয়াদকে বাংলাদেশ বেশি সুযোগ দেয় না। আমার মতে তাঁকে ব্যাটিং অর্ডারের ওপরের দিকে খেলানো উচিত। ৫ এর পরে তো অবশ্যই না। তাঁকে অন্তত ৫ নম্বরে খেলতে দেওয়া উচিত।’
‘বাংলাদেশ দল ২৮০-২৯০ রান সংগ্রহ করতে পারে এই ব্যাটিং নিয়ে। এমন রান করলে বোলিং কেমন হবে বাংলাদেশের? মাশরাফি বিন মর্তুজার বেশ কিছু অপারেশনের পর গতি ওরকম নেই। তবে সে উইকেট ও পায়, দলকে সাফল্যও এনে দেয়। সে উঁচু মাত্রার একজন ক্রিকেটার ও একজন থিংকার। মুস্তাফিজুর রহমান বাঁহাতে বল করে কাটার, ইয়র্কার করতে পারেন, ডেথ বোলিংয়ে ভালো বল করেন। রুবেল হোসেন বাংলাদেশের পেস আক্রমণের সবচেয়ে গতিময় বোলার। রুবেল বল রিভার্স সুইং করাতে পারেন।’
‘একজন ক্রিকেটারকে আমার খুব পছন্দ। তাঁর নাম মেহেদী হাসান মিরাজ। দারুণ অ্যাকশনে বল করে, ব্যাটিং টাও ঠিকঠাক করে। মিরাজ টু ডাইমেনশনাল প্লেয়ার। মোসাদ্দেক হোসেনকে দল খেলাতে পারে। ব্যাটিংটা ঠিক ঠাক করেন, মাঝে মধ্যে বলও করতে পারেন।’

‘এই দলের এক্স ফ্যাক্টর কে হতে পারেন? যেহেতু মঞ্চটা বড়, আপনি বড় বড় প্লেয়ারের দিকেই আঙ্গুল দিবেন। এক তো মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আমার খুব পছন্দের ক্রিকেটার। সে ভালো খেললে দল খুব ভালো ফল করবে। সে দলকে ফিনিশিং টাচ দিতে পারবে। এর সাথে সাকিব আল হাসানের ফর্ম। সে যদি ব্যাট ও বলের সাথে ভালো ফর্মে থাকে তাহলে দল অনেক উপকৃত হবে। আইপিএলে অমন ফর্ম না থাকলেও আন্তর্জাতিওক ক্রিকেটে ফর্ম বদলাবে যেটা বাংলাদেশ দলের তাঁর কাছ থেকে চাহিদা আছে।’
‘এই দল বিশ্বকাপে কোন পর্যন্ত যেতে পারে? এই দল সেমিফাইনালে যেতে পারে। ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড- আমার চোখে টপ তিন দল। চার নম্বরে আমার নজরে বাংলাদেশ আগেভাগেই থাকবে। চার নম্বর জায়গার জন্য নিউজিল্যান্ড লড়বে, দক্ষিণ আফ্রিকা ও পাকিস্তানও আছে। তবে পাল্লাটা বাংলাদেশের পক্ষে একটু হলেও ভারি। নতুন বল যদি দলটি সামলে নেয় তাহলে বাংলাদেশ যেকোন দলের জন্য ভয়ের কারণ হবে।’