

জয়! বিদেশের মাটিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অধরা জয় আর দেখা না দিয়ে থাকতে পারলোনা। আয়ারল্যান্ডের ক্লনটার্ফ ক্রিকেট ক্লাবের মাঠ সাক্ষী হলো বাংলাদেশের প্রথম বিদেশের মাটিতে কিউই বধের। আর সাথে শ্রীলঙ্কাকে হটিয়ে বাংলাদেশও চলে গেলো ওয়ানডে র্যাংকিংয়ের ৬ষ্ঠ অবস্থানে।
র্যাংকিংয়ে এমন স্বস্তিজনক অবস্থায় বাংলাদেশ দল এখন আশা করতেই পারে ২০১৯ সালের বিশ্বকাপে সরাসরি অংশগ্রহণ করার ব্যাপারে। প্রথমে ব্যাট করা নিউজিল্যান্ডের ২৭০ রানের বাঁধা বাংলাদেশ অতিক্রম করে হাতে ১০ বল হাতে রেখেই। মুশফিকুর রহিম আর মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের চওড়া কাঁধে ভর করে বাংলাদেশ জয় পায় পাঁচ উইকেটে।
ক্লনটার্ফে বুধবারের সকালটায় মাশরাফি বিন মর্তুজা টস জিতে বেছে নিয়েছিলেন ফিল্ডিং। বোলাররাও তার সিদ্ধান্তকে যথার্থ প্রমাণ করে সিরিজ চ্যাম্পিয়ন নিউজিল্যান্ডকে করতে দেয়নি ২৭০ রানের বেশী। শেষদিকে এসে নিয়ন্ত্রিত বোলিংটা না করলে হয়তোবা আরও বেশী লক্ষ্যমাত্রা পেলেও পেতে পারতো বাংলাদেশ। এ যাত্রায় সেরকম কিছু আর হয়নি।
জবাব দিতে নেমে একদম প্রথম বলেই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল হাঁকিয়ে বসেন ছক্কা! ওয়ানডে ক্রিকেটে চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে তামিম গড়লেন বিরল এই রেকর্ড। কিন্তু দলীয় মাত্র ৭ রানের মাথায় দারুণ ফর্মে থাকা আরেক উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান সৌম্য সরকারের সাজঘরে ফেরাটা কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছিল।
ওয়ান ডাউনে নামা সাব্বির রহমানকে সঙ্গে নিয়ে তামিম ইকবাল ঘটতে দেননি খারাপ কিছু। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে এ দুজনের ব্যাট থেকে আসে ১৩৬ রানের বড় জুটি। দুজনই তুলে নেন অর্ধশতক। তামিম ইকবাল নিজের ক্যারিয়ারের ৩৫তম আর সাব্বির তুলে নেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৫ম অর্ধশতক।
তবে দলীয় ১৪৩ রানে তামিমের (৬৫) ফিরে যাওয়ার পর বাংলাদেশের উপর ভর করে উইকেট হারানোর ভুত! ১৭ রানের ভেতর সাজঘরে ফেরেন মোসাদ্দেক এবং সাব্বির রহমান। দৃষ্টিকটু এক রানআউটে সাব্বির ফিরে যাওয়ার ১২ রানের মাথায় ফিরে যান মোসাদ্দেকও। অভিজ্ঞ সাকিব আল হাসান আর মুশফিকুর রহিমের ব্যাটই ছিল টাইগার ক্রিকেট ভক্তদের একমাত্র আশা ভরসা।
বেশ স্বাচ্ছন্দ্যেই এগোচ্ছিলেন এই দুজন। গড়েছিলেন ৩৯ রানের জুটি। এরপরেই বাজে শট সিলেকশনের মূল্য দিতে হয় সাকিবকে। ব্যানেটের বলে পুল করতে গিয়ে স্যান্টনারের হাতে ধরা পড়েন সাকিব। একপ্রান্ত আগলে মুশফিকুর রহিম মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে সাথে নিয়ে দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন জয়ের বন্দরে।
৬ষ্ঠ উইকেট জুটিতে এ দুজন যোগ করেন ৭২ রান। মাহমুদুল্লাহ পরে উইকেটে আসলেও জয়সূচক চারটির মাধ্যমে মুশফিককে ছাড়িয়ে ৪৬ রানে অপরাজিত থাকেন রিয়াদ। আর মুশফিকের সংগ্রহ ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ অপরাজিত ৪৫ রান। ৩৬ বলে এক ছয় আর ৬ চারে রিয়াদের ইনিংসের বিপরীতে রানের সমান ৪৫ বল খেলে ৩ চার আর এক ছয়ে মুশফিক সাজান নিজের ইনিংস। দলের জয়ের পেছনে অবদান রাখা অপরাজিত ৪৫ রানের সুবাদে মুশফিকুর রহিম জিতে নেন ম্যাচ সেরার পুরষ্কার।
সংক্ষিপ্ত স্কোরকার্ডঃ
নিউজিল্যান্ডঃ ২৭০/৮ (৫০) টম ল্যাথাম ৮৪, নাইল ব্রুম ৬৩, রস টেইলর ৬০ সাকিব ২/৪১, নাসির ২/৪৭
বাংলাদেশঃ ২৭১/৫ (৪৮.২ ওভার) তামিম ইকবাল ৩৫, সাব্বির রহমান ৬৫, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ৪৬*, মুশফিকুর রহিম ৪৫*। জিতেন প্যাটেল ২/৫৫
ফলাফলঃ বাংলাদেশ ৫ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অফ দ্যা ম্যাচঃ মুশফিকুর রহিম (বাংলাদেশ)।