

সিরিজ জুড়েই ব্যর্থতার সঙ্গী হতে হলো বাংলাদেশকে। যেখানে আজকের ম্যাচের আগে অর্জন বলতে ছিলো মোহাম্মদ মিঠুনের দুটো অর্ধশতক। আজ তৃতীয় ম্যাচেও বরণ করে নিতে হলো পরাজয়, ফলস্বরূপ ৩-০ ব্যবধানে হেরে ধবল ধোলাইয়ের লজ্জা। তাতে খানিক প্রলেপ বোধ হয় দেওয়া গেল সাব্বির রহমানের সেঞ্চুরিটা পাওয়াতে। মার্টিল গাপটিলের করা দুইটা শতক না হোক, অন্তত একটা তো ফিরিয়ে দেওয়া গেল কিউইদের!
আগের দুই ম্যাচে শুরুতে ব্যাট করলেও আজ টসে জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন টাইগার দলপতি মাশরাফি বিন মর্তুজা। পরবর্তীতে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে ৩৩০ রানের পাহাড় সম পুঁজি দাঁড় করে স্বাগতিকরা। এই রানের জবাব দিতে নেমে শুরুতেই তাসের ঘরের মত ভেঙে পড়লো টাইগারদের টপ অর্ডার। যার শুরুটা হলো ওপেনার তামিম ইকবালকে দিয়ে।
৩৩১ রানে টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে লিটন দাসকে নিয়ে ইনিংস শুরু করতে আসলেন তামিম, তবে নিতে পারলেন না দায়িত্ব। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই টিম সাউদিকে ডাউন দ্যা উইকেটে এসে খেলতে যেয়ে ধরা পড়লেন উইকেটে পিছনে দাঁড়ানো টম লাথামের হাতে, ফিরলেন শূন্য রানে। দুই বল বাদেই তামিমের দেখানো পথে হাঁটলেন নতুন ব্যাটসম্যান সৌম্য সরকার, তিনিও আউট হয়ে গেলেন কোন রান না করেই।
দলীয় ২ রানে যখন ২ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছে সফরকারীরা, তখন চলতি সিরিজে ব্যর্থতার ষোল কলা পূরণ করেন আরেক ব্যাটসম্যান লিটন দাসও। ইনিংসের তৃতীয় ও সাউদির করা দ্বিতীয় ওভারে আগের দুই ইনিংসের মতই আজও ১ রান করে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন লিটন। ২ রানে টপ অর্ডারের ৩ ব্যাটসম্যান বিদায় নিলে দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, তবে খুব বেশিদূর টেনে নিয়ে যেতে পারেননি তারা। দলীয় ৪০ রানের মাথায় মুনরোর হাতে মুশফিক ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরলে ভাঙে চতুর্থ উইকেটে ৩৮ রানের জুটি।
মুশফিকের আউটের পর উইকেটে বেশিক্ষণ দাঁড়াতে পারেননি রিয়াদও, দলীয় ৬১ রানে বাংলাদেশের পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসাবে বিদায় নেন তিনি। সেখান থেকে ১০১ রানে জুটি গড়ে বিপর্যয় কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করেন সাব্বির ও সাউফউদ্দিন, এরই এক ফাঁকে নিজের অর্ধশতকটা তুলে নেন সাব্বির রহমান। তবে সাব্বির পারলেও ব্যর্থ হয়েছেন সাইফউদ্দিন, আউট হয়েছে ৪৪ রান করে।
তারপর মাশরাফিও দ্রুত ফিরে গেলে নতুন ব্যাটসম্যান মেহেদী হাসান মিরাজকে নিয়ে হারেন ব্যবধানটা কেবল কমাতে থাকলেন সাব্বির, এর মধ্যেই তুলে নিলেন এই ফরম্যাটে নিজের প্রথম শতকটা। যেখানে ১০৫ বলে সেঞ্চুরি করতে সাব্বির ১২টা চারের সাথে হাঁকিয়েছেন ২টা ছয়ের মার। সাব্বিরের তিন অঙ্ক ছোঁয়ার পরেই অষ্টম উইকেটে ৬৭ রানের পার্টনারশিপের মাথায় ব্যক্তিগত ৩৭ রানে টিম সাউদির পঞ্চম শিকারে পরিণত হন মিরাজ।

সেখন থেকে ৫ রানের ব্যবধানে রুবেল ৩ ও শেষ ব্যাটসম্যান হিসাবে সাব্বির ১০২ রানে আউট হয়ে গেলে ২৪২ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস। ফলে ৮৮ রানে ম্যাচ হারের সাথে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ খুইয়ে বসে বাংলাদেশ।
এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে হেনরি নিকোলাসের ৬৪, রস টেইলরের ৬৯, দলের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক টম লাথামের ৫৯ রানের পর শেষদিকে জিমি নিশাম ও কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমের জোড়া ৩৭ রানের কল্যাণে স্কোর বোর্ডে ৩৩০ রান জমা করে নিউজিল্যান্ড। বাংলাদেশের হয়ে ৯৩ রান খরচাতে মুস্তাফিজুর রহমান নেন ২ উইকেট। এছাড়াও মাশরাফি, রুবেল, সাইফউদ্দিন ও মেহেদী হাসান মিরাজরা প্রত্যেকেই নেন সমান ১টা করে উইকেট।