

বিপিএল আর মুশফিকের যুগলবন্দী যেন এক হতাশার নাম। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ছয় আসর শেষ করে ফেলা মুশফিকের দল কোনবারই যেতে পারেনি ফাইনালের মঞ্চ পর্যন্ত। দোষটা মুশফিকের নয়, দলগতভাবে মুশফিকের দলগুলো কিছু করতে না পারাটাও বড় কারণ। তাইতো নিজের ভেতরে একধরণের ‘যুদ্ধ’ চলছিলো তার, তবে এবার তুলনামূলক দুর্বল দল নিয়ে এ আসরে যেটুকু করেছেন এতেই বেশ তৃপ্ত তিনি।

বিপিএল আসলেই মুশফিক দুর্ভাগাদের কাতারে চলে যান, কখনোই খেলতে পারেননি তারকা সমৃদ্ধ কোন দল থেকে। সিলেট রয়্যালস, বরিশাল বুলস, রাজশাহী কিংস হয়ে এবার ঠিকানা হয়েছিলো বিপিএলে দল দিতেই অনাগ্রহ প্রকাশ করা চিটাগাং ভাইকিংসে। দলের খেলোয়াড় কেনার ধরণ দেখেই বোঝা গিয়েছিলো কোনরকম নাম টিকিয়ে রাখতেই দল দিচ্ছেন মালিকপক্ষ। তাই এমন দলে পারফর্ম করার পাশাপাশি দলকে মোটামুটি ভদ্রস্থ একটা জায়গায় নিয়ে যাওয়ার চ্যালেঞ্জ অবশ্যই ছিলো মুশফিকের।
হ্যা মুশফিক কিছুটা হলেও পেরেছেন, টুর্নামেন্ট এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশিদের মধ্যে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক মুশফিকই। দল হিসেবেও শুরুর দিকে ছিলেন সেরা অবস্থায়, প্রথম ৭ ম্যাচে ৬ জয়। কিন্তু শেষদিকে এসে আবারও পুরোনো রুপে চিটাগাং ভাইকিংস, গত আসরে যারা ছিলো টেবিলের তলানিতে। পরের ৫ ম্যাচে একটা জিতে প্লে-অফ খেলা চিটাগাং আজ ঢাকার কাছে ৬ উইকেটে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায়ও নিয়ে নিলো।
তবে দিনশেষে তৃপ্ত মুশফিক, কারণ নিজের উপর বর্তানো দায়িত্ব কিছুটা হলেও পালন করতে পেরেছেন তিনি, কিছু ক্লোজ ম্যাচ বুদ্ধিদীপ্ত সিদ্ধান্তে জিতেছেনও, সবচেয়ে বড়কথা আনকোরা এক দল নিয়ে এতদূর আসাটাই মুশফিকের বড় প্রাপ্তি। আর খোলাখুলিভাবেই জানালেন নিজের ভালোলাগার বিষয়টা।
আজ ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এসে মুশফিক বলনে, ‘আগের সব আসর থেকে কিছু কিছু কারণে এবার আমি অনেক খুশি। কারণ কিছু কিছু জায়গা ছিল যেখান থেকে বের হয়ে আসা চ্যালেঞ্জ ছিল, নিজেকে বিশ্বাস করানোর ব্যাপার ছিল। সেদিক থেকে নিজের কাছে যে যুদ্ধটা ছিল তাতে একটু সন্তুষ্ট।’
এবারের অভিজ্ঞতাগুলো বিশেষকরে কয়েকটা ক্লোজ ম্যাচ জেতা ভবিষ্যতে কাজে দিবে বলেও মনে করেন তিনি, ‘অনেক কঠিন পরিস্থিতি ছিল, যেখান থেকে ম্যাচ এদিক-ওদিক হতে পারত। সেখানে ক্লিক করতে পারায় আমি খুশি। এটা আমাকে পরের মৌসুমের জন্য অনেক আত্মবিশ্বাস দেবে।’
তবে টস জিতে এলিমিনেটর ম্যাচে আগে ব্যাট করেও ভালো সংগ্রহ করতে না পারার হতাশা লুকাতে পারেননি মুশফিক। অকপটে স্বীকার করেছেন পিচে বোলারদের জন্য আহামরি কিছু না থাকা সত্বেও নিজেদের বাজে ব্যাটিংয়েই এই ভরাডুবি, ‘বাঁচা মরার ম্যাচ। একটা লড়াই হবে এটাই চেয়েছিলাম। উইকেটে আহামরি কিছু ছিল বোলারদের জন্য সেটাও না। যদি ১৬০ রানের মতো করতে পারতাম তাহলে ওদের চাপে ফেলতে পারতাম। সেটা হয়নি। আমাদের এক-দুইজন ব্যাটসম্যান সহজে উইকেট দিয়ে দিয়েছে। একটা রান আউটও হয়েছে। কেউ ক্যারি করতে পারেনি। এরকম ভালো একটা দলের বিপক্ষে খেললে এত ভুল করলে আসলে কঠিন হয় ফিরে আসা। আজ হতাশাজনক, তবে সব মিলিয়ে যদি বলেন দল হিসেবে এতদূর আসতে পারা গর্ব করার মতো।’