

মিনহাজুল আবেদিন আফ্রিদি, নামটা এতক্ষণে আপনারা শুনেছেন। রংপুর রাইডার্স ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের শনিবারের ম্যাচটি টিভিতে বা মাঠে যেয়ে দেখে থাকলে তাঁর বোলিংও দেখে ফেলেছেন। ঢাকা ডায়নামাইটসের বিস্ময় বোলার আলিস আল ইসলামের মতো বিস্ময় উপহার দিতে না পারলেও অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার চোখে পড়েছেন ভালোভাবেই। ব্যতিক্রম এই প্রতিভা আগলে রাখার তাগিদ অনুভব করছেন রংপুর দলপতি।
চোটের কারণে রংপুরের স্কোয়াড থেকে ছিটকে গেছেন পেসার আবুল হোসেন রাজু। তার পরিবর্তে ডেকে পাঠানো হয়েছিল ১৭ বছর বয়সী তরুণ লেগ স্পিনার মিনহাজুল আবেদিন আফ্রিদিকে। গত বছরের অক্টোবরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন দিনের ম্যাচে (প্রস্তুতি ম্যাচ) খেলেছিলেন আফ্রিদি। ৩ ওভার বল করে ১১ রান খরচ করে নিয়েছিলেন পিটার মুরের উইকেট।
সেই আফ্রিদিকে কিছুদিন আগে হঠাৎ করেই ডেকে পাঠানো হয়েছিলো বিপিএলের দল রংপুর রাইডার্স শিবিরে। তারপর থেকেও চলছিলো অভিষেকের ক্ষণ গণনা। অবশেষে হয়ে গেছে সেটাও, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বড় পরিসরের কোনো টুর্নামেন্ট খেলতে নেমেছিল আফ্রিদি।
কুমিল্লার ইনিংসের ৭ম ওভারে টি-টোয়েন্টিতে প্রথমবারের মতো বল করতে আসেন মিনহাজুল আবেদিন আফ্রিদি। প্রথম ওভার থেকে কোন বাউন্ডারি ছাড়া হজম করেন ৪ রান। প্রথম স্পেলে আফ্রিদিকে দিয়ে আরো এক ওভার করান মাশরাফি। সেই ওভার থেকেও আসে ৪ রান। বলাই বাহুল্য আহামরি কিছু দেখাতে পারেননি প্রথম স্পেলে।
দ্বিতীয় স্পেলে ফেরেন ১৭ তম ওভারে। কুমিল্লার শেষ উইকেটটি নিতে আফ্রিদিকে করতে হলো ৩ বল। তৃতীয় বলে করেছিলেন গুগলি যা কিনা দ্রুত ভিতরে ঢুকে সঞ্জিত সাহার প্যাডে আঘাত হানে। আর তাতেই মেলে আফ্রিদির কাঙ্ক্ষিত উইকেট।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে আসা রংপুর রাইডার্স অধিনায়ক আলাদা করে বললেন ঐ আফ্রিদির দ্বিতীয় স্পেলের কথা।
‘যেভাবে ও (মিনহাজুল আবেদিন আফ্রিদি) বোলিং করেছে, বিশেষ করে দ্বিতীয় স্পেলে এসে দুইটা বল করেছে সে, দেখে মনে হয়েছে সে বেশ আত্মবিশ্বাসী।’
আফ্রিদির সক্ষমতা ও সম্ভাবনা নিয়ে মাশরাফি বলেন, ‘প্রথম দিকে কিছু হাফ ভলি, ফুল টস দিয়েছে। পরে যেই দুইটা বল করেছে সেটা জায়গা মত ছিল। এদেরকে আসলে একটু সাহস বা নির্দেশনা দিলে, আমাদের যেই দুর্বল জায়গাটা আছে তা পূরণ হবে। বিশেষ করে বাংলাদেশ ক্রিকেটে, লেগ স্পিনারের ক্ষেত্রে, এমন কিছু প্রতিভা পেলে যদি ব্যাক আপ করা যায়, তাহলে হয়তো আমাদের জন্য ভালো হবে। আমার কাছে সত্যিই মনে হয়ে অনেকের মধ্যে সে ব্যতিক্রম।’

এছাড়া মাশরাফির প্রশংসা জুটেছে পেসার শহিদুলের কপালেও। ভয় না পেয়ে আপন মনে বল করতে পারা শহিদুলকে বড় ম্যাচে খেলিয়েছে মাশরাফির দল রংপুর। রাইডার্সদের হয়ে ৪ ম্যাচ খেলে ৫ উইকেট পেয়েছেন নারায়নগঞ্জের এই ২৪ বছর বয়সী পেসার।
শহিদুলকে নিয়ে মাশরাফির মূল্যায়ন, ‘আমরা চেষ্টা করেছি যত তরুণ খেলোয়াড় ছিল তাদের সামনে আনার। শহিদুলকে আমরা খুব গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ থেকে আমরা খেলিয়েছি। তাকে আমরা কঠিন, সহজ পরিস্থিতি বলেন, সবখানে খেলিয়েছি। সে খুব ভালোও করেছে। সব থেকে ভালো লেগেছে আমার, সে কিছুতেই ভয় পায় না। আপন মনে বল করে। একটা খেলোয়াড়ের সবচেয়ে বড় শক্তি হচ্ছে সামনে কি হচ্ছে না ভেবে আমি কি করব সেটা ভাবা। সে খুবই আত্মবিশ্বাসী, এটা আমার কাছে ভালো লেগেছে।’