

পয়েন্ট টেবিলের সেরা দুই নিশ্চিত হয়েছিলো আগেই। তবে গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচেও যেন আজ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে ছেড়ে কথা বললো না রংপুর রাইডার্স। টুর্নামেন্টের প্রথম লেগে ৯ উইকেটের হারানোর পর আজ দ্বিতীয় লেগেও একই ব্যববধানে জয় মাশরাফি বাহিনীর। আর এতেই গ্রুপ পর্ব শেষে কুমিল্লার সমান ১৬ পয়েন্ট থাকলেও রান রেটের ব্যবধানে এগিয়ে থেকে লিগ টেবিলের শীর্ষ দল হিসাবেই পরের পর্বে রংপুর।

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের গত আসরে কোনোরকমে সুপার ফোর নিশ্চিত করেছিলো সেই আসরে নাম বদলে নতুন রূপে ফেরা ফ্র্যাঞ্চাইজি রংপুর রাইডার্স। খুড়িয়ে খুড়িয়ে এলিমিনেটর পর্বে উঠলেও পরে করেছিল বাজিমাত। ফাইনালে ঢাকা ডায়নামাইটসকে ৫৭ রানে হারিয়ে উঁচিয়ে ধরেছিলো শিরোপাখানা। গতবার যেখানে শেষ করে রেখেছিলো, চলতি মৌসুমে যেন সেখান থেকেই শুরু করলো অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার দল। টুর্নামেন্টের শুরুর দিকে খানিক দিক হারালেও সময় গড়ানোর সাথে সাথে নিজেদের শক্তিমত্তা জানান দিয়েছে তারা। আজ গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে কুমিল্লাকে ৯ উইকেটে হারিয়ে টানা ৬ জয় তুলে নিয়ে লিগ টেবিলের সেরা হয়েই পরের পর্বে যাচ্ছে রাইডার্সরা।
এদিন মিরপুরের শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টসে জিতে শুরুতেই ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। দলের হয়ে তামিমের সাথে আজ ইনিংসের গোড়াপত্তন করতের দেখা যায় উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান এনামুল হক বিজয়কে। তবে দলীয় শুরুটা একেবারে যাচ্ছেতাই হয়েছে কুমিল্লা। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই রংপুরের স্পিনার নাহিদুলকে উড়িয়ে মারতে যেয়ে ডি ভিলিয়ার্সের হাতে ধরা পড়ে শূন্য রানে ফেরেন তামিম। এরপর একে একে এনামুল (৫), ইমরুল (০), শামসুর (১২), থিসারা পেরেরা (৩) রানে ফিরে গেলে ৫ ওভার ৩ বলে মাত্র ২৩ রান তুলতেই ৫ উইকেট হারিয়ে বসে সাবেক চ্যাম্পিয়নরা।
এরপর লিয়াম ডসন ও জিয়াউর রহমান ইনিংস মেরামতের কাজ করলেও তা বেশিদূর বাড়তে দেননি রংপুরের পেসার রবি বোপারা, জিয়াকে ২১ রানে সাজঘরের পথ দেখিয়ে ২৩ রানে এই জুটি ভাঙেন তিনি। পরের বলেই দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে নতুন ব্যাটসম্যান হিসাবে উইকেটে আসা আবু হায়দার রনিকে সরাসরি বোল্ড করেন বোপারা। ফলে ৫৬ রানেই ৭ উইকেট হারিয়ে বসে কুমিল্লা। তারপর এই ইংলিশম্যান ১৮ রানে থাকা ডসনকে নিজের তৃতীয় শিকারে পরিণত করলে মাত্র ৭২ রানেই অল আউট হয়ে যায় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। রংপুরের হয়ে বোপারার ৩ উইকেটের সাথে নাহিদুল ও অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা নেন ২টি করে উইকেট।
৭৩ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা দেখেশুনে করলেও ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে সঞ্জিত শাহার বলে ৫ রান করে আউট হয়ে যান রাইডার্সদের ওপেনার মেহেদি মারুফ। এরপর আরেক ওপেনার ক্রিস গেইলের সাথে নতুন ব্যাটসম্যান হিসাবে উইকেটে যোগ দেন চলতি টুর্নামেন্টে নিজের শেষ ম্যাচ খেলতে নামা এবি ডি ভিলিয়ার্স।
গেইল-ভিলিয়ার্স মিলে ৬৭ রানের জুটি গড়ে রংপুরকে ৯ উইকেটের এক অসাধারণ জয় এনে দেন। গেইল ৩০ বলে ৩৫ ও ডি ভিলিয়ার্স ২২ বলে ৩৪ রানে অপরাজিত থাকেন। এই জয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থান ধরে রেখে কোয়ালিফায়ারে পৌছে গেল তারা।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স- ৭২/১০ (১৬.৩ ওভার); তামিম ০, এনামুল ৫, ইমরুল ০, শামসুর রহমান ১২, ডসন ১৮, জিয়াউর ২৪। নাহিদুল ৯/২, মাশরাফি ১৮/২, বোপারা ৭/৩
রংপুর রাইডার্স-৭৬/১ (৯.৩ ওভার); গেইল ৩৫, ডি ভিলিয়ার্স ৩৪, মারুফ ৫, সঞ্জিত সাহা ৩২/১