

বয়সটা ৩৫ ছুঁইছুঁই, জাতীয় দলের হয়ে শেষ মাঠে নেমেছেন প্রায় ১১ বছর আগে! এমন সময়ে খেলার প্রতি মনোযোগ ধরে রাখা দুষ্করই বটে। তবে দিনের পর দিন উপেক্ষিত (জাতীয় দলে) তুষার ইমরান ঘরোয়া লিগে রানের বন্যা বইয়ে দিচ্ছেন। এক মৌসুম শেষ হয়, অন্য মৌসুম আসে। তবে তুষার ইমরান থাকেন একইরকম। রানমেশিন তকমাটা খুব ভালোভাবে যায় যশোরে জন্ম নেওয়া এই ব্যাটসম্যানের সঙ্গে।
জাতীয় ক্রিকেট লিগের ২০ তম আসরের প্রথম রাউন্ডেই আলো ছড়াচ্ছেন তুষার ইমরান। রাজশাহীতে স্বাগতিকদের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে করেছিলেন ১০৪ রান। দ্বিতীয় ইনিংসেও তিন অংকের রান করেছেন তিনি। তৃতীয় দিন শেষে অপরাজিত আছেন ঠিক ১০০ রান করে। ১৬১ তম প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলতে থাকা তুষার ইমরানের সেঞ্চুরি সংখ্যা এখন ৩০। প্রথম ইনিংসে যোগ্য সঙ্গ পাননি তুষার। তবে এযাত্রায় এনামুল হক বিজয় দিচ্ছেন দারুণ সঙ্গ। ৭২ রান করে অপরাজিত থাকা বিজয় ভালোভাবেই আছেন সেঞ্চুরি করার পথে। কোন রান না করে অবশ্য আউট হয়েছেন রবিউল ইসলাম রবি। ৭ উইকেট পাওয়া আফিফ আউট হয়েছেন ৬ রান করে।

প্রথম ইনিংসের ন্যায় দ্বিতীয় ইনিংসেও দ্রুত রান তুলেছেন তুষার ইমরান। প্রথম ইনিংসে ১৪৪ বল খেলে ১৪ চার ও ২ ছয়ে করেছিলেন ১০৪, দ্বিতীয় ইনিংসে এখন অব্দি ১৩৩ বল খেলে ১২ চার ও ১ ছয়ে করেছেন ১০০*। চারে নেমে এনামুল হক বিজয়ের সঙ্গে গড়েছেন ১৫৮ রানের অবিচ্ছেদ্য জুটি। দলকে বাঁচিয়েছেন বিপর্যয়ের হাত থেকে।
এর আগে রাজশাহীর শহীদ কামরুজ্জামান স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাট করে রাজশাহীর শফিউল ইসলাম ও সানজামুল ইসলামদের বোলিং তোপে মাত্র ২১০ রানে গুটিয়ে যায় খুলনা। জবাবে ব্যাট করতে নেমে দুই ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত ও মিজানুর রহমানের ব্যাটে উড়ন্ত সূচনা পায় রাজশাহী। ৪৬ রান করা শান্তকে নিজের বলে নিজে ক্যাচ ধরে ফেরান আফিফ হোসেন ধ্রুব। তাতে ভাঙে ১১৭ রানের জুটি। জুনায়েদ সিদ্দিকী তিনে নেমে সুবিধা করে উঠতে পারেননি। ৪ রান করে আউট হন আফিফের বলে।
তৃতীয় উইকেট জুটিতে মিজানুর রহমান ও ফরহাদ হোসেন গড়েন ৮৯ রানের জুটি। ৫১ তম ওভারে আব্দুর রাজ্জাকের বলে মিজানুর রহমান ১১৫ রান করে আউট হলে উইকেটে আসেন জহুরুল ইসলাম। ফরহাদ হোসেন , সাব্বির রহমান, ফরহাদ রেজা, সানজামুল ইসলামদের নিয়ে দলকে রান পাহাড় উপহার দেবার কাজ সারেন অধিনায়ক জহুরুল। ২৯০ বলে ২০ চারে ১৬৩ রান করে অপরাজিত থাকেন জহুরুল। আর ৫ রান করতে পারলে ছাড়িয়ে যেতে পারতেন নিজের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসকে (প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে)। এছাড়া শেষের দিকে আফিফ হোসেনের বলে বোল্ড হবার আগে ৬ চার ও ১ ছয়ে ৬৪ রান করেন সানজামুল ইসলাম। রাজশাহী অলআউট হয় ৫৫২ রান করে।
খুলনার হয়ে সমান ১ টি করে উইকেট নেন আল আমিন হোসেন, আব্দুর রাজ্জাক ও নাহিদুল ইসলাম। বাকি ৭ উইকেটই নেন আফিফ হোসেন ধ্রুব।