

২০০০ সালে টেস্ট ক্রিকেট খেলা শুরু করে বাংলাদেশ। এই ১৮ বছরে বাংলাদেশের হয়ে সাদা পোশাকে খেলেছেন অনেকেই। তবে পারফরম্যান্স দিয়ে সবার থেকে নিজেকে আলাদা করেছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। ৫৩ টেস্ট খেলে ৬ বার হয়েছেন ম্যাচ সেরা, ৪ বার জিতেছেন সিরিজ সেরার পুরস্কার। বর্তমান বাংলাদেশ টেস্ট দলের অধিনায়কও তিনি। অথচ বিসিবি বসের এক বিতর্কিত মন্তব্যে সাকিব ভক্তদের মনে জেগেছিল শঙ্কা।
একবার টানা ক্রিকেট খেলার ধকলের দোহাই দিয়ে টেস্ট ক্রিকেট খেলা থেকে সাময়িক ছুটি নিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। সেটা অধিনায়কত্ব পাবার পরেই। এরপর উইন্ডিজদের বিপক্ষে টেস্টে সাকিবের অধীনে বাংলাদেশের ভরাডুবির পরে এক মন্তব্য করেন বিসিবির সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন।
‘আমি খেয়াল করেছি কিছু সিনিয়র খেলোয়াড় টেস্ট খেলতে আগ্রহী নয়। আমার বলতে দ্বিধা নেই, সাকিবের মত আরো অনেকে টেস্ট খেলতে চায় না। মুস্তাফিজুরও একই দলে, সে ইনজুরি থেকে বাঁচতে এই ফরম্যাট খেলতে চায় না। রুবেলের মত সিনিয়র ক্রিকেটারও টেস্ট খেলতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। তাই সময় এসেছে নতুনদের নিয়ে ভিন্ন একটা টেস্ট দল গড়ার।’ – নাজমুল হাসান পাপন, ২০ জুলাই, ২০১৮।
এর পরদিনই অবশ্য বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির প্রধান আকরাম খান একমত হননি বোর্ড প্রেসিডেন্টের বক্তব্যের সঙ্গে।

‘সে তো অলরেডি টেস্ট খেলছে, সাথে দলের (টেস্টের) অধিনায়কও সে। সে কিন্তু বলেনি যে সে খেলতে চায় না। বোর্ড প্রেসিডেন্ট কি বলেছেন এই ব্যাপারে আমি পুরোপুরি জানি না। সাকিব আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ একজন ক্রিকেটার।’ – আকরাম খান, ২১ জুলাই, ২০১৮।
আকরাম খানের মতো সাকিবের মন্তব্যের অপেক্ষায় ছিলেন ক্যারিবীয় কিংবদন্তি ও জনপ্রিয় ধারাভাষ্যকার ইয়ান বিশপ।
‘প্রতিটি প্রজন্মের নিজস্ব ভালো লাগা আছে। আমি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটও পছন্দ করি। জানি না সাকিবের ভাবনায় কী কাজ করছে। সাকিবের উচিত বোর্ডের শীর্ষকর্তা কিংবা সভাপতির সঙ্গে একবার বসা। সে কী চায় সেটা ব্যাখ্যা করা। আমি এটা নিয়ে বলতে পারব না। ওর সঙ্গে তো আর আমি এটা নিয়ে আলোচনা করিনি। তবে এটা বলতে পারি, যে টেস্টকে ভীষণ ভালোবাসে, যে এই সংস্করণে দলকে আরও সামনে নিয়ে যেতে চায় তাকে অধিনায়কত্ব দেওয়াটা বাংলাদেশের জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ। শুধু শুধু সাকিবকে নিয়ে কোনো কিছু ছড়ানো ঠিক না। সময় যখন হবে, সে নিজেই এ ব্যাপারে বলবে।’- ইয়ান বিশপ, ২৫ জুলাই, ২০১৮।
না, সাকিব সে বিষয়ে প্রত্যক্ষভাবে এখনো কিছু বলেননি। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম তাঁকে ‘আপনি নাকি টেস্ট খেলতে চান না’ এই প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলেও উত্তর দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেননি সাকিব। তবে উইন্ডিজদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের পর তৃপ্ত অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের কথায় অনেকেরই শঙ্কা কেটে যাবার কথা। কি বলেছেন সাকিব?
‘ওয়ানডেতে আমরা ৩-৪ বছর ধরে ভাল খেলছি। গত বিশ্বকাপের পর থেকেই। এই সিরিজ জেতা আমাদের টি-টোয়েন্টিতেও ভাল করতে আত্মবিশ্বাস দেবে। এখন টেস্ট নিয়ে কাজ করতে হবে। আমরা দেশে এরমধ্যেই ভাল করেছি, এখন বিদেশে ভাল করার পালা।’ – সাকিব আল হাসান, ৬ আগস্ট, ২০১৮।
কথা হল, যদি সাকিব আল হাসান টেস্ট নাই খেলতে চাইবেন তাহলে কেনো টেস্ট নিয়ে কাজ করতে হবে বলবেন? প্রত্যক্ষভাবে কিছু না বললেও সাকিবের কথায় এটা বুঝতে অসুবিধা হয়না যে টেস্টটা তিনি চালিয়েই যাবেন, আর সেটা অধিনায়ক থেকেই।