

নিজেদের ঘরের মাঠে ক্রিকেট ফেরাতে কত কাণ্ডই না করছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। ২০০৯ সালে লাহোর হা-ম-লার পর পাকিস্তানে নিয়মিতভাবে বন্ধই আছে সব ধরণের প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট। তারই ফলশ্রুতিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে নিজেদের হোম ভেন্যু বানালেও ছেদ পড়ছে সেই সম্পর্কে, তাইতো বিকল্প হিসাবে বাংলাদেশ অথবা শ্রীলঙ্কাকে নিজেদের হোম ভেন্যু বানানোর কথা ভাবছে পাকিস্তান!
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে দীর্ঘদিন নির্বাসিত পাকিস্তান, তাইতো নিজেদের ঘরের মাঠে আবার ক্রিকেট ফেরাতে কম চেষ্টা চালাচ্ছে না পিসিবি। প্রথমবার পিএসএলের ফাইনাল আয়োজন, এরপর সেমিফাইনাল-ফাইনাল, বিশ্ব একাদশকে নিয়ে তিন ম্যাচের একটি টি-টোয়েন্টি সিরিজের সাথে শ্রীলঙ্কা সাথে ১টি ও উইন্ডিজকে আতিথ্য দিয়ে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলার পর দেশটিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফেরার একটি প্রক্রিয়া এখন চলমান।
এমন পরিস্থিতিতে সেখানে পূর্নাঙ্গ সিরিজ খেলতে সফর করবে না অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড কিংবা ইংল্যান্ডের মত বড় দলগুলা। সেজন্যই অন্য কোথায় আয়োজন করতে হবে হাইভোল্টেজ এই সিরিজগুলা। এতোদিন ধরে আরব আমিরাতে নিজেদের হোম ভেন্যু বানিয়ে খেললেও এবার সমস্যাতে পড়তে হচ্ছে পাকিস্তানকে।
আরব আমিরাতের আন্তর্জাতিক মানের ভেন্যু; আবু ধাবি, দুবাই এবং শারজা আয়োজন করে আসছিল পাকিস্তানের হোম ম্যাচগুলো। যার দরুন আরব আমিরাত ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) এর সঙ্গে দারুণ একটি সম্পর্ক পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের । তবে সেই ভালো সম্পর্ক এবার ভেঙে যাওয়ার পথে।
কারণ, মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি ক্রিকেটের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হতে চলার কারণে, পাকিস্তানের ব্যস্ত সূচিতে দারুণ ব্যঘাত ঘটতে যাচ্ছে। আরব আমিরাত এখনও পরিণদত হতে যাচ্ছে বিশ্বব্যাপি নানা ফ্রাঞ্চাইজি লিগের তীর্থভূমিতে। তাইতো আরব আমিরাতের ক্রিকেট বোর্ড চাচ্ছে, আগামী মৌসুমের পুরোটা সময় জুড়েই তাদের ভেন্যুগুলোতে বেশ কিছু টি-টোয়েন্টি লিগের আয়োজন করতে।
আর এমনটা হলে পাকিস্তানের হোম সিরিজের সূচি এলোমেলো হয়ে যাবে। সমস্যাতে পড়তে হবে ভেন্যু পাওয়া নিয়ে। যার ফলে পাকিস্তানের আন্তর্জাতিক সূচির সঙ্গে দারুণ একটি বিরোধ তৈরি হচ্ছে আরব আমিরাতের সঙ্গে। এই ঝামেলা মেটানোর জন্যই চলতি মাসে আমিরাত বোর্ড কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা রয়েছে পিসিবি কর্তাদের।
এরই মধ্যে অবশ্য পিসিবি আমিরাত বোর্ডের কাছে অনুরোধ করেছে, অন্য ক্রিকেটিও কর্মকাণ্ডগুলো এপ্রিল থেকে অক্টোবরের মধ্যে সীমাবদ্ধ করে ফেলতে। যেটা কিনা সম্ভব হচ্ছে না ইসিবির জন্য। বরং, অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্তই তাদের ভেন্যুগুলো সবচেয়ে বেশি ব্যবহারের সময় এবং বিদেশি লিগগুলোর জন্য ভাড়া দেয়ার সময়।
ভেন্যু নিয়ে এমন সংকটাপন্ন পরিস্থিতিতে অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আসন্ন টেস্ট, টি-টোয়েন্টি এবং ওয়ানডে সিরিজের জন্য কোথায় নিজেদের হোম ভেন্যু স্থানান্তর করবে সে নিয়ে বেশ মুসিবতে পড়েছে পাকিস্তান। এ জন্য বিকল্প ভেন্যু হিসাবে পিসিবির প্রথম পছন্দ ছিল ছিল মালয়েশিয়া, কিন্তু দেশটিতে প্রচুর বৃষ্টিপাতের কারণে এবং আর আগে কখনও টেস্ট আয়োজন না করার কারণে, টেস্ট সিরিজ আয়োজন নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে পড়ে গেছে পিসিবি কর্মকর্তারা।
যার ফলে বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কাকেও সম্ভাব্য হোম ভেন্যু হিসেবে চিন্তা করে রেখেছে পাকিস্তান। পাকিস্তানের প্রথম চোখ পড়েছিল বাংলাদেশের দিকেই। যদিও, বিষয়টা এখনও নিশ্চিত নয়। কারণ, বাংলাদেশেরও ব্যস্ত ঘরোয়া এবং আন্তর্জাতিক সূচি রয়েছে। শ্রীলঙ্কাতেও একই ধরণের সমস্যা। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে ভেন্যু হিসাবে পাওয়া পাকিস্তানের জন্য এক কথায় অসম্ভবই বলা চলে।
এ পরিস্থিতিতে পাকিস্তান থেকে প্রস্তাব পেলে করবে বিসিবি? দেশীয় সংবাদমাধ্যমের পক্ষ থেকে বিসিবি প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরীর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘ওদের ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) এ ব্যাপারে আমাদের কাছে কোনো প্রস্তাব কিংবা মৌখিকভাবেও কোনো প্রস্তাব দেয়নি।’