

সিলেটের মাঠে একদম শুরুর দিনেই বিপিএল লড়াইয়ে নেমেছিল ঢাকা ডায়নামাইটস। তবে, স্বাগতিকদের দাপুটে জয়ে শিরোপাধারীরা হোঁচট খায় সূচনাতেই। নিজের মাঠে সিলেটকে পেয়ে তাই ঢাকা পেয়েছে প্রতিশোধের এক জয়। সাকিব আল হাসানের দল টানা জিতেছে দুই ম্যাচেই, দুটোই বড় ব্যবধানে!

ম্যাচটা অবশ্য একটা পর্যায়ে যেয়ে অনেকটা শহীদ আফ্রিদি বনাম সিলেট সিক্সার্সে পরিণত হয়েছিল। আফ্রিদির ঘুর্ণিতে একশো’র আগে অলআউট হওয়ার একটা সম্ভাবনা দেখা দিলেও শেষমেশ তাইজুল ইসলাম আর আবুল হাসানের শেষ উইকেট জুটির কল্যাণে ১০১ রানের পুঁজি পায় সিলেট। জবাবে আফ্রিদি আর এভিন লুইসের ঝড়ে ৭.৫ ওভারেই ম্যাচ জিতে যায় ঢাকা।
টস জিতে সাকিব আল হাসান বেছে নিয়েছিলেন বোলিংটাই। আর আফ্রিদি, রনি আর নারাইনদের হাত ঘুরে সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতাও মিলেছে সিলেটের ইনিংস শেষে। সাজঘরে ফিরে যাওয়ার মিছিল লেগেছিল সিক্সার্স ব্যাটসম্যানদের মাঝে।
চলতি টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা সিলেট উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান উপল থারাঙ্গাকে ফিরিয়ে সিলেটের শিবিরে প্রথম আঘাতটা হানেন ঢাকার পেসার আবু হায়দার রনি। এরপর সুনীল নারাইন তুলে নেন ওয়ান ডাউনে নামা সাব্বির রহমানকে। এবারের আসরে সাব্বিরের ব্যাটটা কথা বলেনি আজও।
নাসির হোসেন তখন যোগ দিয়েছেন দানুশকা গুনাথিলাকার সাথে। আবু হায়দার তোপ হানেন আবারও। এবারে তার শিকার গুনাথিলাকা। হোয়াইটলিও হতে পারেননি থিতু। নারাইন ফিরিয়েছেন এই ইংলিশকে।
বাকি গল্পটা নিজের করে লিখে নিয়েছিলেন আফ্রিদি। নাসির হোসেন, হাসারাঙ্গা, টিম ব্রেসনান আর নুরুল হাসানকে ফিরিয়ে তবেই থেমেছেন এই পাকিস্তানি অলরাউন্ডার।
নারাইন মোহাম্মদ শরিফকে তুলে নিয়েছেন যখন সিলেটের রান তখন মাত্র ৫৩! কত কমে অলআউট হচ্ছে সিক্সার্সরা সে নিয়ে হয়তোবা জল্পনা-কল্পনাও করছিলেন অনেকে। অবাক করা ব্যাপার, সেই সিলেটকে হারাতে হয়নি আর শেষ উইকেটটা!
শেষ উইকেট জুটিতে ৪৮ রান করা যোগ আবুল হাসান রাজু আর তাইজুল ইসলাম সিলেটকে পার করিয়েছেন একশো’র ঘরও। আফ্রিদি নিয়েছেন সর্বোচ্চ চার উইকেট। নারাইন তিনটি আর আবু হায়দারের শিকার ২ উইকেট।
উদ্বোধনে এভিন লুইসের সাথে এদিন ছিলেন শহীদ আফ্রিদি। আর নেমেই ঠিক যেখানে বোলিংয়ের খুনে শেষটা করেছিলেন সেখান থেকেই যেন করেছেন ঝড়ো ব্যাটিংয়ের শুরু!
চার-ছয়ের যেন হিড়িক পড়ে গিয়েছিল শেরে বাংলার মাঠে। ১৭ বলে ৩৭ রানের ইনিংসে আফ্রিদির চার মাত্র একটি! অপর পিঠে ছয় হাঁকিয়েছেন পুরো পাঁচটি। টিম ব্রেসনান আফ্রিদিকে ফিরিয়ে জন্ম দিয়েছিলেন একটু নাটকেরই!
আফ্রিদির ফিরে যাবার পরের বলেই ফিরে গেছেন ক্যামেরন দেলপোর্ত। ব্রেসনান তখন দাঁড়িয়ে হ্যাট্ট্রিকের সামনে। তবে, ঢাকা দলপতি সাকিব আল হাসান সেই সুযোগ দেননি ব্রেসনানকে। লুইসকে সঙ্গে ম্যাচটাও নিয়ে গিয়েছেন সিলেটের নাগালের বাইরে।
সাকিব অবশ্য বেশ মনে রাখতে চাইবেন বিশ ওভারের ম্যাচটা। আজকেই যে পার হয়েছেন বিপিএলে সহস্র রানের ঘর! ১০০০ রান আর ৫০ উইকেটওয়ালা বিপিএলে একমাত্র ক্রিকেটার এখন তিনিই।
এভিন লুইস টানা তিন ছয়ের মারে সিলেটের পরাজয়টা আর দীর্ঘায়িত করেননি। শেষমেশ অপরাজিত ছিলেন ৪৪ রানে। ব্যাটে বলের দারুণ নৈপুণ্য আফ্রিদিকে এনে দিয়েছেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
সংক্ষিপ্ত স্কোরকার্ডঃ
সিলেট সিক্সার্সঃ ১০১/৯ (২০ ওভার) আবুল ৩০*, তাইজুল ১৬*, থারাঙ্গা ১৫। আফ্রিদি ৪/১২, নারাইন ৩/১০, রনি ২/২৩
ঢাকা ডায়নামাইটসঃ ১০৬/২ (৭.৫ ওভার) লুইস ৪৪*, আফ্রিদি ৩৭, সাকিব ১৮*। ব্রেসনান ২/২০
ফলাফলঃ ঢাকা ডায়নামাইটস ৮ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অফ দ্যা ম্যাচঃ শহীদ আফ্রিদি (ঢাকা ডায়নামাইটস)।