

পচেফস্ট্রুমে সফরের একমাত্র জয়ের জন্য লক্ষ্য ছিল ২২৫ রান। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এই বিশাল সংগ্রহ তাড়া করতে নেমে সুবিধা করতে পারেননি বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। দক্ষিণ আফ্রিকা জয় পেয়েছে ৮৩ রানের। ফলে প্রোটিয়া সফরে টানা তৃতীয় হোয়াইটওয়াশ হলো বাংলাদেশ।
দ্বিতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে হাশিম আমলা ও ডেভিড মিলারের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ২২৪ রানের পাহাড় গড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। ৩৬ বলে সাতটি চার ও ৯টি ছক্কায় ১০১ রানের দানবীয় অপরাজিত ইনিংস খেলেন মিলার।
জবাব দিতে নেমে একশ রান না তুলতেই ৭ ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে বসে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৪ রান করে লড়াই চালিয়েছিলেন সৌম্য সরকার। শেষ পর্যন্ত ৮৩ রানের বিশাল জয় পায় দক্ষিণ আফ্রিকা।
পচেফস্ট্রুমের সেনওয়েস পার্কে টসে জিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ব্যাটিংয়ে পাঠান সাকিব আল হাসান। ইনিংসের শুরুতেই স্বাগতিক দুই ব্যাটসম্যান মাঙ্গালিসো মোসেলে ও অধিনায়ক জেপি ডুমিনিকে সাজ ঘরে ফেরত পাঠিয়ে জোড়া আঘাত হানেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। তারপরও প্রোটিয়াদের রানের চাকা সচল ছিল।
দশম ওভারের পঞ্চম বলে ২০ রান করা ডি ভিলিয়ার্সকে সাইফুদ্দিন ফেরত পাঠালেও এক পাশ আগলে রাখেন আমলা। তিনি ৫১ বলে ৮৫ রানের চমৎকার একটি ইনিংস খেলে দলকে এই সংগ্রহ গড়ে দিতে অন্যতম অবদান রাখেন। ১১টি চার ও একটি ছক্কার মার ছিল তাঁর এই ইনিংসে।
এদিন ডেভিড মিলার ছিলেন আরো বেশি উজ্জ্বল। তিনি ৩৬ বলে ১০১ রানের একটি ঝড়ো ইনিংস খেলেন। বিশেষ করে ইনিংসের ১৯তম ওভারে সাইফুদ্দিনের প্রথম পাঁচ বলে পাঁচটি ছক্কা মেরে তিনি রীতিমতো ঝড় বইয়ে দেন বাংলাদেশের বোলিংয়ের ওপর।
৩৫ বলে সেঞ্চুরি করে টি-টুয়েন্টি ফরম্যাটে বিশ্বরেকর্ড গড়েন তিনি। ৩৬ বলে সাতটি চার ও ৯টি ছক্কায় ১০১ রানের দানবীয় অপরাজিত ইনিংস খেলেন মিলার। ফলে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ২২৪ রান সংগ্রহ করে দক্ষিণ আফ্রিকা।
বাংলাদেশের পক্ষে সাকিব ও সাইফউদ্দিন দুটি করে উইকেট নেন।
২২৫ রানের জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের শুরুতেই আউট হয়ে ফিরেন ওপেনার ইমরুল কায়েস ও সাকিব আল হাসান। ইমরুল ৬ রান করে রানআউটে কাটা পড়েন।
মাত্র ২ রান করে জেপি ডুমিনির বলে বোল্ড হন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। এরপর মুশফিকুর রহিমও মাত্র ২ রান করে উইকেটরক্ষকের কাছে ক্যাচ তুলে প্যাভিলিয়নে ফেরেন।
প্রথম ম্যাচের মতো শেষ ম্যাচেও আশা জাগিয়েছিলেন ওপেনার সৌম্য সরকার। ঝড়ো ব্যাটিংয়ে হাফসেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে প্রায় পৌঁছে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু আরও একবার আক্ষেপ নিয়েই ফিরতে হয় এই ওপেনারকে। ৬টি চার ও একটি ছক্কায় ২৭ বলে ৪৪ রানের ঝড়ো এক ইনিংস খেলে ফ্যাঙ্গিসোর বলে বাউন্ডারিতে ধরা পড়েন সৌম্য।
তারপর সাব্বির রহমান ৫ আর লিটন দাস করেন ৯ রান। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ২০ বলে ২৪ রান করে স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়েন। শেষদিকে সাইফউদ্দিনের ২৩ রান আর মিরাজের ১৩ রানে ১৮.৩ ওভারে ১৪১ রান পর্যন্ত যেতে পেরেছে টাইগাররা। ফলে ৮৩ রানের বিশাল জয় তুলে নিয়েছে জেপি ডুমিনির দল।
ম্যাচ সেরা ও সিরিজ সেরা হয়েছেন ডেভিড মিলার।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
দক্ষিণ আফ্রিকাঃ ২২৪/৪ (২০ ওভার) মিলার ১০১*, আমলা ৮৫, ডি ভিলিয়ার্স ২০, ডুমিনি ৪; সাকিব ২/২২, সাইফউদ্দিন ২/৫৩
বাংলাদেশঃ ১৪১/১০ (১৮.৩ ওভার) সৌম্য ৪৪, সাকিব ২, মুশফিক ২, সাব্বির ৫, মাহমুদউল্লাহ ২৪, লিটন ৯, সাইফ ২৩; হেনড্রিকস ১/২৮, ডুমিনি ২/২৩, ফ্রাইলিংক ১/৯, প্রিটোরিয়াস ১/২৭, ফাঙ্গিসো ২/৩১, ফেলুকওয়ায়ো ১/২১
ফলাফলঃ দক্ষিণ আফ্রিকা ৮৩ রানে জয়ী।
সিরিজঃ ২-০ ব্যবধানে দক্ষিণ আফ্রিকা জয়ী।
ম্যাচ সেরাঃ ডেভিড মিলার (দক্ষিণ আফ্রিকা)।
সিরিজ সেরাঃ ডেভিড মিলার (দক্ষিণ আফ্রিকা)।