

সাদা পোশাকে পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করলেও রঙ্গিন পোশাকে হোয়াটওয়াশ হয়েছে লঙ্কানরা। শারজাতে সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে ৯ উইকেটের বিশাল জয় পেয়েছে পাকিস্তান। পাকিস্তানের সাথে ওয়ানডেতে হোয়াইটওয়াশের পাশাপাশি টানা ১২ ম্যাচে পরাজিত শ্রীলঙ্কা।
বোলারদের দুর্দান্ত পারফরমেন্সে দিন নিজেদের করে নিয়েছে পাকিস্তান। উসমান-শাদাবদের সামনে ঠিকভাবে দাড়াঁতে পারেনি কেউই। ব্যাটসম্যানদের ব্যার্থতায় নিজেদের ইনিংসে মাত্র ১০৩ রানেই গুটিয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। জাবাবে ১৭৮ বল হাতে রেখেই ৯ উইকেটের জয় পায় পাকিস্তান। ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা ও পাকিস্তানের সাথে টানা তিন হোয়াইটওয়াশের লজ্জায় লঙ্কানরা।
শারজাতে টস জিতে ব্যাটিং নিয়েছিলেন লঙ্কান অধিনায়ক উপল থারাঙ্গা। তার এই সিদ্ধান্ত সুখকর হয়নি দলের জন্য। ইনিংসের প্রথম ওভারেই জোড়া আঘাত হানেন পাকিস্তানি পেসার উসমান খান। প্রথম ওভারের শেষ দুই বলে নিয়েছেন ২ উইকেট। পঞ্চম বলে বোল্ড হয়েছেন সাদিরা সামারাবিক্রমা। পরের বলে সরফরাজ আহমেদের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন দিনেশ চান্দিমাল। দুজনই মেরেছেন ডাক!
তৃতীয় ওভারে তৃতীয় বলেই শ্রীলঙ্কান অধিনায়ককে বোল্ড করেন উসমান। ওভারের পঞ্চম বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন নিরোশান ডিকওয়ালা। তখন শ্রীলঙ্কা স্কোরবোর্ডে ৮ রানেই নেই ৪ উইকেট! স্কোরটা ২০-এ যেতেই পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে ফেরেন মিলিন্ডা সিরিবর্ধনেও। এবারও ঘাতক উসমান। সেই সাথে উসমান অর্জন করেন ক্যারিয়ার সেরা ৫ উইকেট। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মাত্র দ্বিতীয় ম্যাচেই ৫ উইকেট পেলেন উসমান। তাও মাত্র ২১ বলের মধ্যে!
তারপর উইকেটে আসা লাহিরু থিরিমান্নে ও প্রসন্ন গড়েন সর্বোচ্চ ২৯ রানের জুটি। ১৯ রান করে থিরিমান্নে ফেরার পর রানআউট হয়ে প্রসন্ন সাজঘরে যান ১৬ রানে। ইনিংসে সর্বোচ্চ ২৫ রান করে শাদাব খানের বলে প্যাভিলিয়নে ফেরেন পেরেরা। ওভারে দু’বল পরেই ভান্দারসেকে শিকার করেন শাদাব। তারপর দুশমান্থা চামেরাকে ফিরিয়ে দিয়ে লঙ্কান ইনিংসের ইতি টানেন হাসান আলি। ফলে ২৬.২ ওভারে ১০৩ রানেই গুটিয়ে যায় শ্রীলঙ্কা।
শ্রীলঙ্কাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে ৫ উইকেট নিয়েছে পেসার উসমান খান। তাছাড়া হাসান আলি ও শাদাব খান ২টি করে উইকেট নিয়েছে।
জয়ের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ব্যাটিংয়ে নেমে দুর্দান্ত শুরু এনে দেন পাকিস্তানি দুই ওপেনার। ফাখার জামান ও ইমাম উল হক উদ্বোধনী জুটিতে ৮৪ রানের জুটি গড়েন। হাফ সেঞ্চুরি থেকে দুই রান দুরে থেকে ভান্দারসের বলে উইকেটরক্ষকের কাছে ক্যাচ তুলে ফাখার জামান সাজঘরে ফেরেন। তখন জয়ের জন্য দলের প্রয়োজন মাত্র ২০ রান।
তারপর উইকেটে আসা ফাহিম আশরাফকে নিয়ে ইমাম উল হক মাত্র ২০.২ ওভারেই জয়ের বন্দরে পৌছায়। ইমাম উল হক হক ৪৫ ও ফাহিম ৫ রানে অপরাজিত থাকেন। পাকিস্তান ১ উইকেটে ১০৫ রান সংগ্রহ করে, ১৭৮ বল বাকি রেখেই ৯ উইকেটের বিশাল জয় পায়।
ক্যারিয়ার সেরা পাঁচ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হয় উসমান খান। পাঁচ ম্যাচে ১৪ উইকেট নিয়ে সিরিজ সেরা হয়েছে পেসার হাসান আলি।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
শ্রীলঙ্কাঃ ১০৩/১০ (২৬.২ ওভার) থিরিমান্নে ১৯, পেরেরা ২৫, প্রসন্ন ১৬, চামেরা ১১; উসমান ৫/৩৪, হাসান আলী ২/১৯, শাদাব ২/২৪
পাকিস্তানঃ ১০৫/১ (২০.২ ওভার) ফখর জামান ৪৮, ইমাম ৪৫*, ফাহিম ৫*; ভান্দারসে ১/৩০
ফলাফলঃ পাকিস্তান ৯ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরাঃ উসমান খান (পাকিস্তান)।
সিরিজ সেরাঃ হাসান আলি (পাকিস্তান)।
সিরিজঃ পাকিস্তান ৫-০ ব্যবধানে সিরিজ জয়ী।