

প্রথম টেস্টের শেষদিনের আগেই বেজে গিয়েছিল হারের ঘন্টা। যদিও পঞ্চম দিনটায় সারাদিন টিকে থাকতে পারলে আসতো সম্মানজনক ড্র। কিন্তু ৩৫ রানেই বাকি থাকা ৭ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ ম্যাচ হেরেছে ৩৩৩ রানে। সংগ্রহটা মাত্র ৯০, বছর দশেক পর শ’রানের নিচে গুটিয়েছে টাইগাররা। ভেঙ্গে পড়া মুমিনুলরা অবশ্য পাশেই পাচ্ছেন ওয়ানডে দলের কাপ্তান মাশরাফি বিন মর্তুজাকে।
এমন পরিস্থিতিতে ক্রিকেটারদের মুন্ডুপাত করাটা ভক্তদের জন্য খুব স্বাভাবিক। অনলাইনের এই যুগে সামাজিক গণমাধ্যমে মুশফিকদের দগ্ধ হতে হচ্ছে সমালোচনার আগুনে। যথেষ্ট কারণও আছে তার পেছনে। টস জিতে বোলিং নেয়া থেকে শুরু হয়েছিল আলোচনা। আর অমন ফ্ল্যাট উইকেটে শেষদিনে নিজেদের প্রতিপক্ষের বোলারদের হাতে সঁপে দেয়া ব্যাটিংয়ে চলছে এখনও।
টেস্ট দলে মাশরাফি বিন মর্তুজা খেলছেন না শেষ আট বছর ধরে। তবে ওয়ানডেতে শুধু খেলছেনই না, দলের নেতৃত্ব শেষ তিন বছর ধরে তার কাঁধেই। সাদা পোশাক থেকে নিজে দূর থাকলেও মুশফিকদের ঘাড়েই হাতটা রাখছেন মাশরাফি। সমালোচনায় মত্ত না হয়ে বরং বাস্তবতাটা বুঝে সমর্থকদের মাশরাফি অনুরোধ করেছেন দলের পাশে থাকতে।

‘আমরা যদি সবার প্রতিক্রিয়ার দিকে তাকাই তবে দেখবো সবাই শুধু সমালোচনাই করছে। অথচ চারটা দিন যে ছেলেগুলো মাঠে লড়াই করেছে সেটা কেউই বলছিনা। এটা ঠিক যে কিছু ভুল হয়েছেই আর নাহলে দ্বিতীয় ইনিংসে এমনটা হতোনা। কিন্তু আমরা যদি ঘরে বসে এতটুকু বুঝতে না পারি যে দক্ষিণ আফ্রিকার কন্ডিশনটা কি তবে সেটা অবশ্যই দুঃখজনক।’
ক’দিন আগেই ঢাকা টেস্টে অস্ট্রেলিয়াকে মাত্র চারদিনেই হারিয়েছে বাংলাদেশ দল। উদাহরণ হিসেবে মাশরাফিও দাঁড় করিয়েছেন অজিদের সেই পরাজয়কে। সমালোচনার পাশাপাশি খেলোয়াড়দের মানসিক অবস্থাও বুঝতে ভক্তদের তাগিদ দিলেন মাশরাফি।
‘ক্রিকেটাররা কি পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে সেটা যদি আমরা না বুঝি তবে ক্রিকেট নিয়ে আলোচনা করাটাই ঠিক না। অস্ট্রেলিয়াও আমাদের এখানে এসে চারদিনে ম্যাচ হেরেছে। আমরা শুধু জয় পরাজয়টাই দেখি।’
‘এখানেই তো শেষ হচ্ছেনা। আরও ম্যাচ আছে সামনে। এই দলটাই কিন্তু আমাদের টেস্ট জয়ের আনন্দ উপহার দিয়েছে। আমাদের উচিৎ তাদের প্রেরণা দেওয়া। দেশে বসে আরও ভাল কি বার্তা তাদের জন্য পাঠানো যায় সেই চেষ্টাটাই করা উচিৎ আমাদের।’
মুশফিকদের হাত ধরেই এসেছে শ্রীলঙ্কার মাঠে শততম জয়। ইংলিশদের বিরুদ্ধে সিরিজে পিছিয়েও পাওয়া গেছে দারুণ এক জয়। আর ঢাকা টেস্টে অস্ট্রেলিয়া বধ তো আছেই। মাশরাফির কথাটা যদি সমর্থকরা গেঁথে রাখে মাথায়, সমর্থনটা যদি দেয়া যায় সময়মত। তবে এই দলই উপহার দিবে আরও দারুণ কিছু জয়।