একাধারে তিনি অধিনায়ক, উইকেটরক্ষক এবং দলের অন্যতম নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যানের একজন। তারপরও টেস্ট দলে মুশফিকুর রহিমকে দেখা যাচ্ছে একেকবার ব্যাটিংয়ের একেক পজিশনে। এমন পরিস্থিতি থেকে নিস্তার পেতে মুশফিক চান নিজের ভূমিকা সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা।
উইকেটের পেছনটা সামলান বলেই ক্লান্ত থাকেন অন্য সবার চেয়ে একটু বেশি। তাই বিশ্রামের সময় দিয়ে তিনি খেলে থাকেন ছয় নম্বরে। এই সিরিজের দুই টেস্টেও খেলেছেন ছয়ে। কিন্তু, পরিস্থিতি আর তার ফর্ম বলছে মুশফিকের ব্যাট করা উচিৎ আরেকটু উপরে। সেটা হতে পারে চারে কিংবা পাঁচে।
দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে এসেছিল কিছু রদবদল। বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যানের সংখ্যা বেশি হয়ে যাওয়ায় চার নম্বরে নাসির হোসেনকে পাঠানো হয়েছিল ব্যাট হাতে। প্রশ্নটা ছিল, ডানহাতি যদি প্রয়োজনই হয় তবে মুশফিক তো আছেনই, নাসির কেন? জবাবে মুশফিকের ভীষণ বাস্তববাদী উত্তর।
“আমার কথা যদি বলে থাকেন, ১২০ ওভার কিপিং করার পর যদি আবার চার নম্বরে ব্যাটিং করতে হয়, তাহলে আমি বলব এটা আমার একার দায়িত্ব নয়। শুধুমাত্র অধিনায়ক হিসেবেই নয়, প্রত্যেকটা ক্রিকেটারের একটা অনুমাপক থাকে খেলার। টেস্টে এমনটা হতে পারে না যে আপনি আগে ব্যাটিং পেলে চারে খেলবেন, পরে ব্যাটিং পেলে আপনি ছয়ে খেলবেন। সুনির্দিষ্ট জায়গা থাকে। আমার জন্য কাজটি অনেক চ্যালেঞ্জিং।”
এরপরের প্রশ্নটাতেই মুশফিককে দেখা গেলো চরম অসহায়। নিজে চাওয়াটা, ব্যাটিংয়ের জায়গাটা, কিপিং নিয়ে চিন্তা; সব মিলিয়েই হতাশ মুশফিক জানাতে পারেননি নিজের ভূমিকাটা। তবে ইচ্ছে পোষণ করেছেন জানার।
“অধিনায়কত্ব না থাকলেও আমার কোন সমস্যা নেই। কিপিং না থাকলেও সমস্যা নেই। আমি ব্যক্তিগতভাবে অনুভব করি যে শতভাগ দিতে পারছি কিনা। প্রয়োজনে দ্বাদশ খেলোয়াড় হিসেবেও শতভাগ দিতে আমি রাজি। সেটাতে আমার সমস্যা নেই। আমার মনে হয় উপরে যারা আছেন তাদেরকে এই প্রশ্নটা করা ভালো। সেক্ষেত্রে আমিও আমার দিক থেকে পরিষ্কার হয়ে যাই। ইনপুট আরও ভালো ভাবে দিতে পারি।”
কিপিং করুন বা না করুন, ক্যারিয়ারের শেষ দিনটা পর্যন্ত নিজের সেরাটাই বাংলাদেশকে দিতে চান মুশফিক। “এটাতো আসলে আমার ইচ্ছাতে হচ্ছে না। আমি যে শ্রীলঙ্কাতে কিপিং করিনি, সেটাও আমার ইচ্ছাতে ছিল না! আমার কিপিংয়ে কখনোই আপত্তি ছিল না। আমি ৪০-৫০ বছর খেলব না, হয়তো ৫-৬ বছর খেলবো। আমি চেষ্টা করি, দলের জন্য যতটুকু সম্ভব সেরাটা দেওয়ার।”
সেরাটা মুশফিক দিতে চান সব সময়ই, একদম শুরু থেকেই। তবে সেটা দিতে হলে নিজের ভূমিকাটা যে জানতে হবে সাদা পোশাকে বাংলাদেশের অধিনায়কের। জানতে চাচ্ছেন না নাকি তাকে জানানো হচ্ছেনা এ প্রশ্ন থেকেও বড় প্রশ্ন এখন তবে কি মুশফিক আর কর্তৃপক্ষের মধ্যকার ‘সেতুটা’ ঠিক কাজ করছেনা!